নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে রমরমা জুয়ার আসর। নিত্যদিন গভীর রাত পর্যন্ত চলে এ জুয়ার আসরগুলো। জুয়ার আসরে টাকার সাথে সাথে স্বর্ণের জিনিস এমনকি মোটরসাইকেলও জমা রাখা হয়। সেই সাথে চলে মাদকের বেচাকেনা। এতে মুষ্টিমেয় কিছু লোক লাভবান হলেও বেশির ভাগ লোক সর্বশান্ত হচ্ছে। আর জুয়াড়িরা রাতারাতি বনে যাচ্ছেন টাকার মালিক। তবে সূত্র বলছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কিছু কর্মকর্তাকে টাকা দিয়েই জুয়ার আসর চালানো হয়। ক্লাব ঘর, গোডাউন ও পার্টি অফিসের নামে এসব জুয়া খেলার আসর চালানো হয়। এমনকি জুয়ার আসরেই সুদের উপরে টাকা লেনদেন করা হয়। ১০ হাজার টাকায় দু’হাজার টাকা সুদে টাকা দেওয়া হয়। এভাবে প্রতিদিন জুয়ার আসর চালিয়ে গেলেও তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় এসব জুয়ার আসর চলে। সাপ্তাহিক ও মাসিক মাসোয়ারা দেওয়ার বিনিময়ে এসব আসর চলতে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন মাদক স্পটে প্রতি রাতে লাখ লাখ টাকার কারবার হয়। রাত ১০ টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এসব জুয়ার আসর। যেসব স্থানে জুয়া খেলা হয় তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে নওদাপাড়া ট্রাক টার্মিনাল। টার্মিনালে শাহিন নামের একব্যক্তির নের্তৃত্বে জুয়া খেলা হয়। রাত ১০ টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খেলা হয়। নগরীর বায়া মঞ্জুরের আম বাগান সংলগ্ন এলাকায় জুয়া খেলা হয়। সেন্টু নামের একব্যক্তি এ জুয়ার আসর চালায়। ওই এলাকার মধ্যে এ জুয়ার আসরটি সব থেকে বড় আসর। এ আসরে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন গিয়ে জুয়া খেলে। নগরীর রাজপাড়া থানার ডাবতলা সিলিন্দা এলাকায় একটি মার্কেটে সোহেল নামের একব্যক্তি জুয়ার আসর চালায়। সূত্র জানায়, সোহেল সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে চাঁদা দিয়ে এ আসর চালায়। জুয়ার আসরে মাদক কেনাবেচাও হয়।
সেই সাথে জুয়ার স্পট গুলোতেস্বর্ণের আংটি, চেইন ও মোটরবাইকও জুয়ার বোর্ডে ধরা হয়। এ ছাড়া সেই আসরে টাকা চড়া সুদে ধার দেওয়াও হয়। জুয়ার বোর্ডের লোকজন ১০ হাজারে দু’হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে টাকা দেয়। আর জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দিতে না পারলেও সেটি টাকা ধার দেওয়া ব্যক্তির হয়ে যায়। এস আসরটিও রাত ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে। নগরীর উপশহর এলাকায় বিদ্যালয় রাস্তার পাশের একটি চেম্বারেও জুয়া খেলা হয়। রাসেল নামের একব্যক্তি সেই জুয়ার আসর চালায়। দীর্ঘদিন ধরে এ আসরটি চলে আসছে। আলিফ লাম মিম ভাটার ভিতরে মিলন, রাজশাহী স্টেডিয়ামে রিপন নামের ব্যক্তিরা জুয়ার আসর চালায়। এছাড়াও সপুরা এলাকায় গোডাউনের মধ্যে জুয়ার আসর চলে।
নগরীর লক্ষীপুর কাঁচাবাজার, কোর্ট বাজার, স্টেশন এলাকা, সাহেব বাজার, কাদিরগঞ্জ, টার্মিনাল, ভদ্রাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জুয়ার আসর চললেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে নগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, যেসব এলাকায় জুয়া খেলা হয় সেসব জুয়ার আসর চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে ব্যবসা করছে জুয়াড়িদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, জুয়াড়ীরা বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এমন অভিযোগ করেছে। তারপরও খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আর