ঢাকাশুক্রবার , ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীতে উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের চেয়ারম্যান পদে ৫৫ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী

অনলাইন ভার্সন
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৯ ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক: উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান পদের জন্য ৫৫ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা কেন্দ্রে জমা দিয়েছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ। এদের মধ্যে বেশিরভাগই গত মঙ্গলবার ও বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর দলীয় মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন। গত মঙ্গলবার জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত তালিকা কেন্দ্রীয় কমিটির দফতরে জমা দেয় জেলা আওয়ামী লীগ।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে এখনও তেমন কোনও তোড়জোড় দেখা যায়নি। বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকেই চেয়ে রয়েছেন। ফলে এক অর্থে বলা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নিষ্ক্রিয় বিএনপি। এবছর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাও খুব কম। আগামী ১০ মার্চ প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, জেলার ৯টি উপজেলা থেকে তাদের কাছে ৫৫ জনের নাম এসেছে। উপজেলা নেতারা বর্ধিত সভা করে জেলায় তালিকা পাঠিয়েছেন। উপজেলা থেকে পাঠানো সবার নাম কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। এদের বেশিরভাগই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে মনোনয়নপত্র বিতরণ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় তালিকার বাইরেও অনেকেই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে চারজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তিনি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এর মধ্যে আছেন, মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, সহসভাপতি সোহরাব আলী, সদস্য এনামুল হক এবং জেলা যুবলীগের সহসভাপতি আলমগীর মোরশেদ রঞ্জু।
এদিকে জাতীয় পার্টি থেকে ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মোহনপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা কামরুজ্জামান বুলু।

চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে স্থানীয়ভাবে একজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার নাম ফকরুল ইসলাম। তিনি দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে এই উপজেলা থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট টিপু সুলতান দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন এমন প্রচার রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ মহলে।

বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান পদে তিনজনের নামের তালিকা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু, বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাছ আলী ও বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
আশরাফুল ইসলাম বাবুল। তিনজনই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

আশরাফুল ইসলাম বাবুল বলেন, আমাদের তিনজনের নামের তালিকা উপজেলার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি জেলা কমিটির মাধ্যমে কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবো। একই কথা বলেন আক্কাছ আলী ও লায়েব উদ্দিন লাভলু।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জনের করে নামের তালিকা প্রস্তুত করে জেলা কমিটির মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে প্রার্থীরা ইতোমধ্যেই দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন। দল যাকে মনোনীত করবে তার পক্ষেই সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মোট ১২ জন প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের কাছে মনোনয়নের বিষয়ে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। তবে বুধবার পর্যন্ত ছয়জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে এদের মাঝে সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন তিন জন। এরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জিএম হিরা বাচ্চু ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক জেলা সভাপতি বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সামাদ।

চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জিএম হিরা বাচ্চু জানান, এবার পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগের পক্ষে থেকে মোট ১২ জন প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের কাছে দলীয় মনোনয়নের জন্য জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল, সবাই দীর্ঘদিন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাই এখানেও অনেকে মনোনয়ন চাইবে, অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমি মনে করি দল থেকে এবার আমাকেই দলনেত্রী মনোনয়ন দেবেন। ছাত্রজীবন থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি,আজীবন করবো। অতীতে দলের দুঃসময়ে মাঠে থেকে সংগ্রাম করেছি জেল খেটেছি। আমি আশা রাখি আমার সকল দিক বিবেচনা করে দলনেত্রী এবার আমাকেই মনোনয়ন দেবেন।

তবে নির্বাচনের জন্য বিএনপি থেকে এখন পর্যন্ত কোনও দৌড়ঝাঁপ দেখা যায়নি। পুঠিয়া উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী আনারুল হক জুম্মা জানান, দল থেকে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে দুই একদিনের মধ্যে কেন্দ্র থেকে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। মোট কথা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে আনারুল হক জুম্মা বলেন, দল থেকে যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের অনুমতি মেলে এবং উপজেলার কর্মী-সমর্থকরা সিদ্ধান্ত নেয়, তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।

বাগমারায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চারজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা অনীল কুমার সরকার, বাসুপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মতিউর রহমান টুকু। চারজনই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

এছাড়া জাতীয় পার্টির উপজেলা সভাপতি আবু তালেবও দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।
তবে অন্যান্য উপজেলার মতো এই উপজেলাতেও বিএনপি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে আছেন। এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে তেমন কোনও তোড়জোড় দেখা যায়নি।

বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, উপজেলায় সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ডে নিজেকে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তিনি এবারও দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

বাগমারা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে তিনিই মনোনয়ন পাবেন বলে আশা তার।

আগামী ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে তানোর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে তানোর উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। গত মঙ্গলবার সকালে তারা ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয় হতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেন।

তানোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন, থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, থানা যুবলীগের সভাপতি ও কলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না, পাঁচন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান আবদুল মতিন ও থানা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম।
ইতোমধ্যে আবদুল মতিন ছাড়া সব প্রার্থীই নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে বিএনপি কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে এখন পর্যন্ত কাউকে ভোটের মাঠে দেখা যায়নি।

এবিষয়ে তানোর থানা বিএনপির সভাপতি মোজ্জাম্মেল হক বলেন, আমাদেরকে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের বিষয়ে এখনো কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তাই উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের কোনও ভাবনা নেই।
এদিকে মনোনয়ন ফরম বিক্রির প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় ধানমন্ডি হতে গোদাগাড়ী উপজেলার পাঁচজন মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন।

এদের মধ্যে রয়েছেন গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম আতাউর রহমান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও গত উপজেলা নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী একেএম আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান ও গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বদিউজ্জামান।

আর দুর্গাপুর উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন মোট ছয়জন। এরা হলেন দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ সরদার, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিব মৃধা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি প্রদ্যুত কুমার সরকার।

খবর২৪ঘণ্টা, জেএন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।