নিজস্ব প্রতিবেদক : হঠাৎ করেই আবারো শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও হত দরিদ্র মানুষজন। কয়েকদিন শীত কম থাকায় স্বাভাবিক হয়ে যাওয়া জনজীবনে হঠাৎ করেই আবার পড়তে শুরু করেছে শীতের বিরুপ প্রভাব। শনিবার ও রোববার রাতে বৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই শীত বাড়তে শুরু করে। রোববার পর্যন্ত হালকা শীত অনুভূত হলেও সোমবার সকাল থেকেই ছিল শীতের দাপট। সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিললেও দুপুরে সূর্য উঠে। সূর্য উঠায় শীত কিছু কমে যায়। তবে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথেই শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। সন্ধ্যার পর আরো বেশি শীত অনুভূত হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শীতের তীব্রতা আরো বেড়ে গিয়ে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর তীব্র শীতে কাঁপতে শুরু
করেছে ছিন্নমূল ও হত দরিদ্র মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখের পর থেকে রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের উপজেলায় শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে শীতের তীব্রতা বেড়ে শৈত্য প্রবাহ পড়তে শুরু করে। কনকনে শীতে হিমেল যাওয়ায় এ এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। দীর্ঘ সময় কনকনে ঠাণ্ডা থাকলেও গত সপ্তাহের শুরুর দিক থেকে শীতের পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। শীত কমায় আবারো স্বাভাবিক হয়ে যায় জনজীবন। শুক্রবার, শনিবার ও রোববার রাতে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টিতে আবহাওয়া আবারো শীতল হয়ে
যায়। দু’দিন তাপমাত্রার পরিমাণ কম থাকলেও সোমবার সকাল থেকে কনকনে ঠাণ্ড অনুভূত হতে থাকে। সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মিললেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঠাণ্ডা কমে যায়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। শীত বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়ে যেতে শুরু করেছে। সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত রোগে ভর্তি হয়। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাষকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। এদিকে, শীত বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে শীতে কাঁপছে ছিন্নমূল ও হত দরিদ্র মানুষজন। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় তারা এবার শীতবস্ত্র পাননি। শীতবস্ত্র হিসেবে
কম্বল পেলেও তা অপ্রতুল। এসব ছিন্নমূল মানুষ ও হতদরিদ্ররা শীত নিবারণে সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে শীতবস্ত্র সহায়তা চাচ্ছেন। কয়েকদিন বাজারে শীতের পোশাক কেনা ক্রেতার সংখ্যা কমলেও সোমবার অনেক ক্রেতাকে শীতের পোশাক কিনতে দেখা যায়। চলতি বছরে রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ জানুয়ারী রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের তীব্রতা আরো বেড়ে
যাবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। সেই সাথে এ অঞ্চলের উপর দিয়ে শৈত্য প্রবাহ যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, সোমবার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ ও সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। মঙ্গলবার থেকে শীতের তীব্রতা আরো বেড়ে যাবে। শৈত্য প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
আর/এস