নিজস্ব প্রতিবেদক : আদালত ও আরডিএ’র নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাত্র ৪ ছটাক জমির উপরে রাস্তা ও অন্যের জায়গা দখল করে তিনতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী মহানগরীর বাসার রোড রামচন্দ্রপুর এলাকার রানী বেগম নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। বাড়ির নির্মাণ কাজ পরবর্তী নির্দেশ ও বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও রানী বেগম সেই নির্দেশে কর্ণপাত না করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই বাড়িটি নির্মাণে দখল করা হয়েছে চলাচলের রাস্তা। এ নিয়ে ওই এলাকার আবুল হাসান নামের একব্যক্তি রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আরডিএ’তে
অভিযোগ ও আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আরডিএ কর্তৃপক্ষ অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ও নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। ওই নোটিশে বলা হয়, এক তলা বাড়ির ছাদ পর্যন্ত নির্মাণ করেছে বিবাদী রানী বেগম। যেহেতু তিনি নির্মাণ কাজের অনুমোদিত নকশা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন সেহেতু অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে কেন তা ভেঙ্গে ফেলা হবেনা তার সন্তোষজনক জবাব ৭ দিনের মধ্যে দাখিল করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে জবাব দিতে না পারলে কোন বক্তব্য না শুনেই পরবর্তী
আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও আরডিএ থেকেও নকশা অনুমোদন নেয়া হয়নি।
ওই নির্মাণাধীন বাড়ির শ্রমিকরা জানান, ছোট জায়গার উপরে নিচতলায় একটি ঘর আর সিড়ি করা হচ্ছে। এটি তিনতলা হবে। ছাদের উপর দিয়ে বৈদুতিক তার চলে গেছে। শ্রমিকরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
অভিযোগকারী আবুল হাসান জানান, তিনি রানী বেগমের ভাই শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ১ কাঠা জমি কিনেছিলেন। জমির সাথে তিনি ৩ ফুট রাস্তাও কিনেছিলেন। রানী
বেগম ভবন নির্মাণ করতে রাস্তাটিও দখল করে নিয়েছেন। রাস্তা দখল করে নেয়ার কারণে চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। রানী বেগমকে নিষেধ করার পরও তিনি না শোনায় অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরডিএ কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধের নোটিশ দেয়। তিনি নির্দেশ অমান্য করেই ভবন নির্মাণ করছেন। এরপর তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত থেকে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়।
আরডিএ ও আদালত দুই প্রতিষ্ঠানেরই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রভাব খাটিয়ে রানী বেগম ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবেশীরাও এভাবে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাড়ি নির্মাণ করতে নিষেধ করলেও তিনি শোনেননি। বরং যারা নিষেধ করেছে তাদেরও তিনি দেখে নেয়ার হুমকি দেন। তার প্রভাবের কাছে মহল্লাবাসী অসহায় হয়ে পড়েছে। তিনি অভিযোগ
করে আরো জানান, রানী বেগমের স্বামী সেনাবাহিনীতে চাকুরী করেন। এ কারণে তিনি আরো বেশি প্রভাব খাটাচ্ছেন। তাই তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যাতে বাড়ির নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়। আবুল হাসান আরো অভিযোগ করে বলেন, আমি কোথাও ভালোভাবে সহযোগিতা পাইনি। এ কারণে রানী বেগম সবার নির্দেশ অমান্য করে বাড়ি নির্মাণ করতে পারছেন। পুলিশের পক্ষ থেকেই ভালোভাবে সহযোগিতা পাইনি।
আদালতের নির্দেশ উভয়ের কাছে পৌঁছে দেয়া নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার
এএসআই মনিরুল ইসলাম বলেন, আদালত থেকে থানায় নির্দেশনা আসলে সেই নোটিশ মোতাবেক ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকেই শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বলা হয়। বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত যে যে অবস্থায় আছে সে সেই অবস্থাতেই থাকবে। আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয় এমন ঘটনা ঘটালে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেটি দুই পক্ষকেও বলা হয়েছে। পুলিশ তাকে আবুল হাসানের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে অনেকবার পুলিশ গেছে। জমিজমা আদালতের বিষয়। আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করেছি আইন অনুযায়ী।
এমকে