খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে জনসভার অনুমতিও পেয়েছে দলটি।
শনিবার দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি।
প্রায় এক যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি ব্যাপক শোডাউনের প্রস্ততি নিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার আগে ঢাকায় সাংগঠনিক শক্তির প্রমাণ দিতে চাইছে দলটি।
ঢাকা মহানগর বিএনপি, সকল অঙ্গসংগঠন ও আশপাশের জেলাগুলোকে লোক সমাগমের বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া দলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা প্রস্ততি সভাও করেছেন।
জানা গেছে, ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুল নেতাকর্মী জনসভায় হাজির হবেন। অনেকেই আজ শুক্রবার রাতে ঢাকায় অবস্থান নিয়েছেন। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান তার শতাধিক নেতাকর্মীসহ ঢাকায় অবস্থান করছেন।
রোমান বলেন, ‘বিএনপির জনসভার কথা শুনলেই আওয়ামী লীগ সরকার ভয় পায়। সেজন্যই আগেই ঢাকায় চলে এসেছি। কেননা আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে আজকের জনসভাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
‘আমরা প্রত্যাশা করি, আজকের জনসভা থেকে দেশনেত্রী ও মাদার অব ডেমোক্রাসি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নতুন বার্তা দেবেন। কারণ আগামীতে জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে বেগম জিয়ার মুক্তির বিকল্প নেই। তাকে ছাড়া নির্বাচন অর্থপূর্ণ হবে না’ যোগ করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমাদেরকে জনসভায় শরিক হওয়ার জন্য কেন্দ্র থেকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে জনসভায় উপস্থিত থেকে জনসভা সর্বাত্মকভাবে সফল করবো, ইনশাল্লাহ।’
এদিকে শনিবারের জনসভার জন্য ইতোমধ্যে বিএনপির সিনিয়র নেতারাও দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সাথে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সাথে নিয়ে বৈঠকও করেছেন। নেতাকর্মীদের বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুনের পাশাপশি নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ বহন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জনসভাস্থল ও আশে পাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও নেতাদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও জনসভা প্রসঙ্গে ওয়াকিবহাল।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জনসভায় ব্যাপক লোকসমাগম ঘটিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা দিতে চায় বিএনপি। জনসভা থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একদফা দাবি ও জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু কর্মসূচির বার্তা আসতে পারে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমও হবে এবং সফল হবে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শনিবার দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশে জনতার স্রোত নামবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
দলের সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আবেগ অনুভূতির জায়গা হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজকে তিনি কারাগারে। তাকে ছাড়া আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে হচ্ছে। তার মুক্তির দাবিতে নেতাকর্মীরা দলে দলে সমাবেশে যোগ দেবেন, এটাই স্বাভাবিক।’
সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে এবং দলের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন।
বিএনপি নেতারা জানান, সবসময় রাজধানীতে বড় কোনো সমাবেশের হলে ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেন। শনিবার দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ, তাই অন্যবারের চেয়ে আরো বেশি নেতাকর্মী নয়াপল্টনের সমাবেশে যোগ দেবেন।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে গত ২০ জুলাই রাজধানীর নয়াপল্টনে দীর্ঘদিন পর জনসভা করেছিল বিএনপি। মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিশে সেখানেও হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নেমেছিল।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন