গোলাম তোফাজ্জল কবীর মিলন, বাঘা প্রতিনিধি: সামনে রমজান মাস আসছে, তাই সরেরহাট কল্যাণী শিশু সদনের ৩০ জন বৃদ্ধ ও ১৬৯ জন এতিম নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিচালক। রমজান মাসের জন্য তাদের খাবার ও ঈদের পোশাকের ব্যবস্থা নেই। কিন্তু রমজান মাসকে সামনে রেখে বৃদ্ধ ও এতিমদের জন্য সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি কেউ ? তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে যত সামন্য সহযোগিতা নিয়ে
প্রতিদিনের তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। তারা তিন বেলা খেতে পেলেও সামনে রমজান মাসের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে পারছেনা। রমজান মাসের খাবার ও ঈদের পোশাকের জন্য পড়েছেন বেকায়দায়। তাই বৃত্তবানদের কাছে রমজান মাসের খাদ্য ও পোশাকসহ আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন পরিচালক।
রাজশাহী শহর থেকে ৫২ কিলোমিটার পূর্বে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের সরেরহাট গ্রাম। এই গ্রামে গড়ে উঠেছে ছোট্ট একটি এতিমখানা। নাম দেয়া হয়েছে সরেরহাট কল্যাণী শিশু সদন। বর্তমানে এতিমখানায় বৃদ্ধের সংখ্যা ৩০ জন ও এতিমের সংখ্যা ১৬৯ জন। এতিমদের মধ্যে ছেলে ১১৮ জন ও মেয়ে ৫১ জন। এই সব বৃদ্ধ ও এতিমরা কেউই তার নিজের নয়।
৩২ বছরে পৈতৃক ১৭ বিঘা জমি বিক্রয় করে তাদের রক্ষা করে চলেছেন। এতে দেশের মানুষের ভালবাসা ছাড়া কি-ই-বা পেয়েছেন। পেয়েছে কেবল একটি খেতাব “সাদা মনের মানুষ” তাতে তো আর বৃদ্ধ ও এতিমদের পেট ভরেনা। কিন্তু তাদের পোশাক ও আর্থিক অভাবে বেকায়দার রয়েছে বৃদ্ধ ও এতিমদের নিয়ে। তিনি বৃত্তবানদের কাছে আবেদন করেন বৃদ্ধ ও এতিমদের বাচানোর জন্য।
এতিমখানার পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন সরকার শমেস ডাক্তার প্রথমে স্ত্রী মেহেরুন্নেসার মোহরানা বাবদ অর্থে ১২ শতাংশ জমি
ক্রয় করে চালু করেন এতিমখানা। আয় বলতে মেহেরুন্নেসার সেলায় ফোঁড়া ও শমেস ডাক্তারের চিকিৎসা থেকে আসা কিছু অর্থ।
বৃদ্ধ ও এতিমদের রক্ষার্থে আশ্রয়হীনদের ব্যবস্থা করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি বাড়ির ভিটা বিক্রি করে নিজেই পরিবার নিয়ে হয়ে পড়েন গৃহহীন। তিনি পল্লী চিকিৎসক পরিবার নিয়ে পড়েন বিপাকে। শেষ পর্যন্ত স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে উঠে আসেন এতিমখানায়। স্ত্রী মেহেরুন্নেসা শিশুদের দেখা শুনা ও তাদের জন্য রান্না করেন তিন সন্ধ্যা। এখন মেহেরুন্নেসা সেখানকার একজন সেবিকা। বিনিময়ে দুটো খেতে পান মাত্র।
বর্তমানে এতিমখানায় বৃদ্ধ ও এতিমদের নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সবাই এক সাথে দিন রাত কাটান।
এতিমখানার পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন সরকার শমেস ডাক্তার বলেন, নিজের স্ত্রীর, ছেলে-মেয়ের, সরকারি, বেসরকারি ও ব্যাক্তিগতভাবে যে, সহযোগিতা পায়, তা দিয়ে ছয় মাস চলে। আর ছয় মাস বিভিন্ন দোকানে বাঁকি রাখতে হয়। বছর শেষে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা ঋনের মধ্যে থাকতে হয়। সরকার ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে সহযোগিতা পেলে অন্তত এই ঋণ থেকে মুক্তি পেতাম। বর্তমানে ৫২ শতাংশ জমির উপর এতিমখানাটি উপজেলা সদর থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার পূর্বে সরেরহাট গ্রামে অবস্থিত।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ