খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ১২টি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার ব্যবসায়ী তোশারফ হোসেন পপি অপহরণ হয় চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি। ঢাকা থেকে এলে তাকে রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ জানুয়ারি বসন্তপুর গ্রামের একটি আখ ক্ষেতের পাশ থেকে ওই ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনার সাথে জড়িত ৮ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে চারজন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
২৯ জুলাই নগরীর হাজিরহাট থানা এলাকায় ৪ বছরের শিশু মুজাহেদুলকে অপহরণের পর হত্য করা হয়। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারাক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২৫ জুলাই হাজিরহাট এলাকায় শিশু পূর্ণিমাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ধর্ষক ও হত্যাকারিকে গ্রেফতার করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূল জবানবন্দী দেন।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হারাগাছে সুমন নামে এক যুবক নিখোঁজের পর খুন হন। মসজিদের পেছনের সেপটি ট্যাংকি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর তাজহাট এলাকায় কবিরাজ মতি মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। পরে ঘাঘট নদ হতে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করা হলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
চলতি বছরের ৫ জুন দুপুরে নিজ বাড়িতে খুন হন প্রবীণ আইনজীবী আসাদুল হক আসাদ। চুরি উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করা হয়। পুলিশ দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে।
১৯ মে নগরীতে অবসরপ্রাপ্ত মহিলা অডিট কর্মকর্তা মোছা. আরজুমান বানু ওরফে মিনুকে নিজ বাড়িতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারাক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। তবে এঘটনায় নিহতের মেয়ে পৃথক একটি এজাহার করেন।
গত ১ মে তাজহাট এলাকায় এন্তাজ আলী নামে এক বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর নগরীর বীরভদ্র হাতিভাঙ্গাপুল এলাকায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও তার দুই শিশু সন্তানকে স্বামী নৃশংসভাবে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্বামী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর নগরীর মুন্সিপাড়াস্থ কেরামতিয়া মসজিদের পেছনে দক্ষিণে পাশে পুকুর পাড়ে মনোরুল ইসলাম নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। এঘটনায় অপরাদীদের গ্রেফতার করা হয়। গত বছরের ১৪ নভেম্বর দিদার রসুল ওরফে মাটিয়া নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। মায়ের আচল পরিবহনে হেলপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পরবর্তী সময়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানা এলাকা হতে মায়ের আচল বাস উদ্ধার করেন। গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
চলতি বছরের ৭ জুলাই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ কোয়াটারের সামনে জাহেদুন নবী ওরফে সোহেল নামে এক যুবককে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হলে তিনজন আদালতে স্বীকারাক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম মাহামুদ বলেন, মেট্রোপলিটন পুলিশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থায় রয়েছে। চাঞ্চল্যকর হত্যা, অপহরণসহ বেশ কিছু ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে নগরবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে।
খবর২৪ঘন্টা/নই