রংপুরে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের ১৪ নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্থায়ীভাবে তাদের বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
রোববার (২০ আগস্ট) রাতে রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাব্বির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম তানিম আহসান চপলের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন, রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বেলাল হোসেন আপেল, ইয়াসিন আরাফাত শুভ। বদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস তুফান, ময়নুল ইসলাম শাকিল। পীরগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রায়হান সরকার। গঙ্গাচড়া উপজেলা ছাত্রলীগের উপত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সম্পাদক শাকিল আহমেদ, কাউনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য রেজোয়ান রিংকু, ইটাকুমারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহান মিয়া, তাম্বুলপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক, কৈকুড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিমন মোল্লা, গজঘণ্টা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি আল মেহেদী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ আর আরমান খান, দপ্তর সম্পাদক রাশেদ খান আবির ও বড়বিল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাগর ইসলাম।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনের ১৪ নেতাকর্মীকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নিকট সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট ও মন্তব্য করায় ১৩ জন ও একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠায় তাদের অব্যাহতি দিয়েছে রংপুর জেলা ছাত্রলীগ। এদের মধ্যে দুজন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৪ জনের মধ্যে রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াসিন আরাফাত শুভ ধর্ষণ মামলার আসামি। গত ২৬ জুন রাতে পীরগঞ্জ থানায় ইয়াছিন আরাফাত শুভকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী এক গৃহবধূ। গত ২৫ জুন রাতে পীরগঞ্জ উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর এলাকার ওই গৃহবধূ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘর থেকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ইয়াছিন আরাফাত শুভ পেছন থেকে তার মুখ চেপে ধরে পাশের এক মাটির ঘরে তুলে নিয়ে যান। এ সময় গৃহবধূকে খুন করার ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে ইয়াছিন। পরে গৃহবধূর স্বামী টর্চলাইট নিয়ে তাকে খুঁজতে বের হলে ধর্ষণের দৃশ্য দেখে চিৎকার দিলে শুভ পালিয়ে যান।
বিএ/