1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
যুদ্ধ শেষ হয়নি, জামায়াত আমির - খবর ২৪ ঘণ্টা
শনিবার, ১৮ জানয়ারী ২০২৫, ০৪:৪২ অপরাহ্ন

যুদ্ধ শেষ হয়নি, জামায়াত আমির

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যুদ্ধ আমাদের এখনো শেষ হয়নি। বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, ঘুষমুক্ত একটি ন্যায় ইনসাফের বাংলাদেশ গড়েই আমরা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। এই বাংলাদেশ আপনারা চান? আমার সহকর্মীরা চান? তাহলে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ত্যাগ অনেক করেছি, ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তওফিক দিলে জাতির জন্য আরও ত্যাগ স্বীকার করবো। আমরা এক মুহুর্তের জন্য বিশ্রাম নেব না। বিশ্রাম নেওয়ার কোনো সময় আমাদের নাই। এ জীবন অনেক ছোট, কাজ অনেক বড়। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের সন্তানরা এখনো স্লোগান দিচ্ছেÑ আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। এই লড়াই চলবে ইনশাআল্লাহ। কতক্ষণ? যতক্ষণ না ইনসাফ এই জমিনে কায়েম না হয়। আর ইনসাফ কায়েমের গ্যারান্টি একমাত্র আল কুরআন দিতে পারে, আর কিছ্ইু দিতে পারে না। এই কুরআনের শাসন সকল ধর্মের, সকল দলের সকল বর্ণের মানুষের জন্য একমাত্র ইজ্জতের গ্যারান্টি। এই কুরআনের শাসন কায়েমের মধ্য দিয়ে একটা মানবিক বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই, দুর্নীতি এবং দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। অন্য ধর্মের ভাইদেরকে আমরা ভাই হিসেবে দেখি। আমরা মানুষকে ঘৃণা করি না, হিংসা করি না। আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে সম্মান করি। মানুষের দু:খে কষ্টে চেষ্টা করি সাড়া দেওয়ার, এবং এটাও চেষ্টা করি সবার আগে সাড়া দেওয়ার।

মামলাবাজি-চাঁদাবাজি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এ কাজ যারা করেন, বিনয়ের সাথে তাদের অনুরোধ করি, এ কাজ করবেন না। আমাদের শহীদেরে আত্মা কষ্ট পাবে। মানবতা অপমানিত হবে, লাঞ্ছিত হবে, ভাই আল্লাহর ওয়াস্তে এ কাজ ছেড়ে দেন। অফিস আদালতে যারা ঘুষ বাণিজ্য করেন, আবার মামলা বাণিজ্যও অনেকে করেন, তাদের প্রতি আমাদের আন্তরিক অনুরোধ, ভাই কাজগুলো করিয়েন না। আমাদের শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে। সম্মেলনে জামায়াত আমির বলেন, আল্লাহর শক্তিতে বলিয়ান জাতি গঠন করতে চাই। সেই জাতি হবে সাহসী জাতি বীরের জাতি। মুমিনরা আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথানত করে না।

শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, শহীদরা আমাদের জাতীয় সম্পদ, পরম সম্মানের পাত্র। যারা শহীদ হয়েছে, আমরা তাদের দলের, সবাই আমাদের দলের মানুষ। তারা জাতীয় সম্পদ, জাতীয় বীর, মাথার ওপরে শ্রদ্ধার সাথে তুলে রাখতে চাই। জোর করে চালানো গোলামী থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। জাতির ওপর আর কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হবে না। এ সময় শহীদ ও আহতদের স্মরণ করে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই, ৫ আগস্টের পরে জনগণের ওপর কোনো জুলুম অত্যাচার হোক দেশের মানুষ বরদাশত করতে রাজি না। যদি জুলুম চলতে থাকে, বাংলাদেশের জনগণ জালেমকে তাড়িয়েছে, নতুনভাবে কোনো জালেম আবির্ভূত হলে তাকেও বিতাড়িত করে ছাড়বে। আমরা বিশ্বাস করি, সকল দল তাদের মূল কাজ নানুষকে জুলুমের হাত থেকে রক্ষা করা। আমরা দুনিয়ার কল্যাণ চাই আখেরাতের কল্যাণ চাই। আগামীর জাতীয় সংসদ হবে আল কুরআনের সংসদ এটা আমরা আশা করতে পারি। মানবরচিত মতবাদকে আর প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না। আমরা আল্লাহর গোলাম হতে চাই, মানুষের গোলামি করতে চাই না। আগামী দিনে আমরা আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের আমলে বাংলাদেশের জনগণের এইভাবে সম্মেলন করার সুযোগ পাইনি, বাংলাদেশের জনগণ কথা বলতে পারে নাই। পরাজিত সরকার গনতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছিল। ফ্যাসিবাদি ঘষেটি বেগম গুলি চালিয়েছে, অলিতে গলিতে লাশ পড়েছিল। ছাত্র জনতার প্রতিবাদের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। কিয়ামতের আগেই তাদের জন্য অন্ধকার হয়ে গেছে। কোনো জিনিসেরই বাড়াবাড়ি ভাল নয়। মানুষ খুনকারী নেতাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করতে হবে।

তিনি বলেন, চাঁদাবাজ মুক্ত নেতৃত্ব জামায়াতের কাছে আছে, দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব জামায়াতের কাছে আছে, বৈষম্যমুক্ত নেতৃত্ব জামায়াতের কাছে আছে। আমিরে জামায়াতের নেতৃত্বে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন বলেন, ওদের বিচার হবে এবং ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হবে ইনশাআল্লাহ।

এ সময় ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা চাঁদাবাজমুক্ত বাংলাদেশ চাই, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ চাই, ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ চাই। যারা চাঁদাবাজি থেকে দূরে থাকতে পারবেন না, আজকে তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। এদেশে জামায়াতে ইসলামী জনগণের হৃদয় কেড়েছে। যেখানেই বিপদ, মুসিবত, অগ্নিসংযোগ, আমিরে জামায়াত সবার আগে ছুটে গিয়েছেন। একজন মানবিক নেতা ও সংগঠক হিসেবে এদেশের জনগণের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছেন। বাতিলের কাছে আমাদের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা আপোষ করে নাই, আমরাও মাথানত করবো না। আপোষহীন রাজনৈতিক শক্তির নাম জামায়াত ইসলামী। আর বাংলাদেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যাবে না। আগামী দিনে ইসলামের আদর্শিক জন্ম হবে। প্রতিটি ঘরে ইসলামের আদর্শ পৌঁছে দেব। সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী বলেন, আগামী দিনে একটি সফল ইসলামর বিপ্লব হবে বাংলাদেশে। পূর্ণাঙ্গ ইসলামী দেশ হিসেবে কবুল করবেন।

১৫ বছর পর রাজশাহীতে জেলা ও মহানগরীর যৌথ আয়োজনে জামায়াতে ইসলামীর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলা ও মহানগরী জামায়াতের আয়োজনে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে এই সম্মেলন শুরু হয়। মাদরাসা মাঠে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। কানায় কানায় পূর্ণ হয় ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠ। এছাড়া সিপাইপাড়া, ফায়ার সার্ভিস মোড়, ঘোষপাড়া, সিএন্ডবি মোড় মনিচত্বর ও লক্ষিপুরসহ কয়েক কিলোমিটার এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

শনিবার ভোর থেকেই জেলার পবা, মোহনপুর, তানোর, গোদাগাড়ী, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাঘা, চারঘাট ও বাগমারা উপজেলা থেকে কর্মী সম্মেলনে দলটির নেতাকর্মীরা যোগ দেন। এছাড়া মহানগরী ১২ থানা এবং ৩০টি ওয়ার্ড থেকে ব্যানার, ফেস্টুন ও দলীয় প্রতিক দাঁড়িপাল্লা হাতে পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে সম্মেলনে আসেন নেতাকর্মীরা। আমির ডা. শফিকুর রহমানকে স্বাগত জানিয়ে নানা স্লোগান দেন তারা। নগরীর সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন শৃঙ্খলা রক্ষায়।

সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত হন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন দলটির রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. কেরামত আলী। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক। সকাল সোয়া ৯টায় জামায়াতের এ কর্মী সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করেন ৫ আগস্ট রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সাকিব আনজুমের পিতা মাইনুল হক। এসময় বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কুরআন তিলাওয়াত দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। তিলাওয়াত করেন মাওলানা আরিফুল ইসলাম। সম্মেলন উদ্বোধন করেন স্বাগত বক্তব্য রাখেন জামায়াতের রাজশাহী জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক। হামদ পেশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকল্প সাংস্কৃতিক সংসদ।

এ সময় বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম ও মোবারক হোসাইন, সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা আবুযর গিফারী, নাটোর জেলা আমির ড. মীর নুরুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা আমির খন্দকার মো. আব্দুর রাকিব, রাজশাহী জেলার নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল খালেক, মহানগরীর নায়েবে আমির এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, যুব বিভাগের সেক্রেটারি সালাহউদ্দিন আহমেদ, জেলার মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা ইসমাইল আলম আল হাসানী, মহানগরীর উলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল আমিন, খেলাফতে মজলিশের রাজশাহী মহানগরীর সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, হেফাজতে ইসলামের আহবায়ক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী, ছাত্রশিবিরের জেলা পশ্চিম

শাখার সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, জেলা পূর্বের সভাপতি রুবেল আলী, মহানগরীর সাংগঠনিক সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার, জেলার শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক কামরুজ্জামান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নাজমুল হক, মহানগরীর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, জামায়াতের রাজশাহী মহানগরীর সহকরী সেক্রটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক নওসাজ জামান,

মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. শামিম উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রমুখ। প্রদান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে রাজশাহীর শহীদদের নিয়ে গান পরিবেশ করে প্রত্যয় শিল্পী গোষ্ঠি।
যুদ্ধ শেষ হয়নি, এক মুহুর্তের জন্য
বিশ্রাম নেব না: জামায়াত আমির

নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST