নিজস্ব প্রতিবেদক : শুধুমাত্র একটি ১০০ সিসির মোটরসাইকেলের জন্য রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কলেজ সাইফ ইসলাম ওরফে সানি (২৪) হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সানি বানেশ্বর থান্দারপাড়া এলাকার সিরাজুলের ছেলে ও নাটোর এনএস কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র।
তাকে ফেন্সিডিলের সাথে চেতননাশক ওষুধ খাইয়ে গলা কেটে ও হাত পায়ের রগ কেটে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় চারঘাট থানা পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর থান্দারপাড়া গ্রামের মৃত খায়েরের ছেলে সাগর (২৩) ও একই এলাকার ইদল আলীর ছেলে সাকিব (২৪)। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান এসপি মো. শহীদুল্লাহ বিপিএম।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি আরো জানান, চলতি মাসের ৮ তারিখ সকাল আনুমানিক সোয়া ৭টার দিকে চারঘাট মডেল থানাধীন মাড়িয়া মসজিদ পাড়া গ্রামস্থ কলা বাগানের উত্তর পশ্চিম কর্নারে পাকা রাস্তার ঢালে খেঁজুর গাছের নিচে গলাকাটা রক্তাক্ত অবস্থায় সাইফ ইসলাম @সানির গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে তারা স্থানীয় চারঘাট থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সানির বাবা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে চারঘাট মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর এসপির নির্দেশনায় পুলিশ এজাহার নামীয় আসামী সাকিব ও পরে সাগরকে আটক করে। দু’জনকেই রাতে আটক করা হয়।
মামলার বাদী লিখিত অভিযোগ করেন যে, তার ছেলে মৃত সাইফ ইসলাম @ সানি ১নং আসামী সাকিব প্রয়োজনীয় কাজের কথা বলে তার দোকান হতে ছেলের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই মৃত সাইফ ইসলাম @ সানি নিখোঁজ ছিল। তদন্তকালে প্রথমে এজাহার নামীয় আসামী
সাকিব কে রাত আনুমানিক সোয়া ১২টায় চারঘাট মডেল থানাধীন মৌগাছি এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করাসহ তার সহযোগী আসামী সাগর এর নাম ঠিকানা পুলিশকে জানায়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামী সাগরকে রাত পৌনে ২টার দিকে চারঘাট মডেল থানাধীন মৌগাছি বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা উভয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুঠিয়া থানাধীন বানেশ্বর বাজারের মোটরসাইকেল গ্যারেজ থেকে
মৃত সাইফ ইসলাম @ সানি এর মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয় এবং ১ নং আসামী সাকিব এর বাড়ির শয়ন ঘরের চৌকির বিছানার নিচ হতে মোটর সাইকেলের চাবী উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা এলাকায় দুস্কৃতিকারী হিসেবে পরিচিত। তারা উভয়ই মৃত সাইফ ইসলাম @ সানি এর মোটর সাইকেল আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পনা ও পূর্ব
প্রস্তুতি মোতাবেক নেশাজাতীয় ফেন্সিডিলের সহিত ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে মৃত সাইফ ইসলাম @ সানি কে কৌশলে খাইয়ে অচেতন করিয়ে ঘটনাস্থলে ধারালো ছুরি দ্বারা গলা কেটে ও হাত পায়ের রগ কেটে হত্যা করে মোটর সাইকেল নিয়ে যায় বলে স্বীকার করে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, শুধুই মোটরসাইকেলের জন্য এই হত্যা কি অন্য কোন কারণে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন মাহমুদুল হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম উপস্থিত ছিলেন।
এমকে