খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে প্রায় ২০০ জনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে জালিয়াতি করে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর নামও জানা গেছে।
প্রশ্নপত্র জালিয়াত চক্রের হোতা জসিমউদ্দিন, চক্রের সদস্য পারভেজ খান ও জাকির হোসেনকে জিজ্ঞসাবাদ করে এসব তথ্য পেয়েছে সিআইডির তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওই ৩ জনের সাত দিনের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন ছিল গতকাল।গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামি আত্মীয়।প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ সুপার এস এম আশরাফুল আলম শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, তিন আসামি জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের আশ্রয়–প্রশ্রয়দাতা, সহযোগিতাকারী এবং জালিয়াতি করে যাঁরা মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন
তাঁদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ভর্তি হওয়া কিছু শিক্ষার্থীর নামও বলেছেন তাঁরা। এসব তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস করা চক্রের সদস্যদের অবৈধ সম্পদেরও খোঁজ পেয়েছে সিআইডি। চক্রের হোতা জসিমের ঢাকায় দুটি বাড়ি ও একটি গাড়ি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে ২০ জুলাই গ্রেপ্তারের পর সিআইডি জানিয়েছিল, জসিমের কাছে ২ কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক পাওয়া গেছে। এ ছাড়া পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক পেয়েছিল সিআইডি।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সিআইডি ওই ৩ জনের সঙ্গে মোহাইমিনুল ওরফে বাঁধন ও এস এম সানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। চলতি
বছর সাত-আটশ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা কাজ করছিলেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মিরপুর থানায় পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলা করে সিআইডি। মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মোহাইমিনুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে স্নাতক সম্পন্ন করেননি তিনি।
পারিবারিক চক্র গড়ে তোলেন জসিম
প্রথমে পরিবারের সাতজনকে নিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র গড়ে তোলেন জসিম। চক্রে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী শারমিন আরা জেসমিন ওরফে শিল্পী, খালাতো ভাই আবদুস সালাম, দুই ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন ও জাকির হোসেন, ভাতিজা পারভেজ খান ও ভায়রা সামিউল জাফর ওরফে সেটু। এর মধ্যে জসিম, জাকির ও পারভেজ গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকিরা পলাতক।
চক্রের সদস্য সালাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেসের মেশিনম্যান। তিনিই মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের প্রশ্নপত্র ছাপানোর সময় বিশেষ কৌশলে তা বের করে এনে তুলে দিতেন জসিমকে।
মামলাটি তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা সিআইডির উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শাহ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা যতই প্রভাবশালীই হোক না কেন সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই