শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় পাঁচটি গণকবর ও বধ্যভূমি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গণকবর। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে উপজেলার দড়িমুকুন্দ গ্রামে যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে তার বর্ণনা শুনে এখনও অনেকের গা শিউরে ওঠে। এই গণকবরটিকে আরো আধুনিকায়ন করার প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্বাধীনতাকামী মানুষ।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ওবায়দুর রহমান জানান, ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামে পাকিস্তানি সেনারা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। সাত পাকিস্তানি মিলিটারি দড়িমুকুন্দ গ্রামে হানা দেয়। তারা গ্রামের লোকদের ডেকে নিয়ে গ্রামের প্রবেশপথের দু’ধারে লাইনে দাঁড় করিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে গুলি করে হত্যা করে ২৪
জন স্বাধীনতাকামীকে। তারপর পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের প্রতিটি বাড়ি। ২০০২ সালের ২৬ মার্চ শেরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেখানে একটি নামফলক তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ২৫ শে মার্চ গণকবরটির পূনঃনির্মানের মাধ্যমে চতুর্দিকে বাউন্ডারি করে সংরক্ষন করা হয় গণকবরটিকে।
দড়িমুকুন্দ গ্রামের বৃদ্ধ আবুল কালাম জানান, এই গণকবরটিতে বিভিন্ন সময় উপজেলার অফিসাররা এসে দোয়া করে চলে যায়। ১৩ বছর আগে সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হয়েছিল। প্রাচীরের প্লাস্টার উঠে যাচ্ছে। রং মছে গেছে এক বছর পরেই। তাই এই গণকবরের সৌন্দর্য হারিয়ে গিয়েছে। দড়িমুকুন্দ গণকবরের সৌন্দর্য ফেরাতে প্রসাশনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ জানান, প্রত্যেক বছর ২৫ শে মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর দড়িমুকুন্দ গণকবরে দোয়ার আয়োজন করা হয়। তাছাড়া স্থানীয় হাফেজিয়া মাদ্রাসার কর্তপক্ষদের বলা হয়েছে যেন সেখানে যাদের কবর রয়েছে তাদের জন্য দোয়া করতে। আর গণকবরের সৌন্দর্য বধনের জন্য প্রকল্প চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন দেয়া আছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে দড়িমুকুন্দ গণকবর সৌন্দর্য বর্ধন সহ আধুনিকায়ন করা হবে।
জেএন