রাশেদুল ইসলাম,নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুর উপজেলা পরিষদের মাস্টার রোল মালি পদে কর্মরত মাসুদ রানা উপজেলা চত্বরে ঝড়ে পরা একটি মেহগিনি ও অপর একটি শিশুগাছ কেটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে গাছ দুটি সরিয়ে নিতে তিনিই মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন বলে দায় নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যূতি।
এদিকে গাছ দুটির মূল্য লক্ষাধিক টাকা দাবী করা হলেও বনবিভাগ মূল্য নির্ধারণ করেছেন ১৮ হাজার ৫ শ ৩১ টাকা বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যূতি ।
লালপুর উপজেলার গোপালপুর মহিষখোলা গ্রামের আফসারের ছেলে আলমগীর সম্প্রতি জেলা প্রশাসককে গাছ দুটি কেটে নিয়ে যাওয়া বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোেগে তিনি দাবী করেন,গাছ দুটির মূল্য হবে লক্ষাধিক টাকা।
জেলা প্রশাসক শাহ রিয়াজ জানান,বিষয়টি তদন্তের জন্য ইউএনওকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে গাছ কাটার সত্যতা পাওয়ার পর জানতে চাইলে ইউএনও জানান, গত আগস্ট মাসে কোন এক সময় ঝড়ে গাছ দুটি হেলে পড়ে, তার একটি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের রুমের উপরে হেলে পড়ে। এরপর মাসিক মিটিংয়ে এ সংক্রান্ত আলোচনা হয়। গাছ দুটি কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর মূল্যধার্য করতে বন বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু গাছ দুটি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কেএম নজরুল ইসলামের ঘরের ওপর পরে ছিল। তাই নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে গাছ দুটি সরিয়ে নিতে তিনি মৌখিক ভাবে মাসুদকে নির্দেশ দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও জানান,এ সংক্রান্ত কোন জরুরী সভা বা লিখিত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে গাছ দুটি সরিয়ে নেয়ার পর বনবিভাগ থেকে ১৮ হাজার ৫ শ ৩১ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গাছের লগগুলো স্থানীয় বিপ্লব নামে একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
অভিযোগকারী ও স্থানীয়রা জানান, শিশু গাছটি ১৯৮৩ সালে এবং মেহগিনি গাছটি প্রায় ২০ বছর আগে লাগানো হয়। বনবিভাগের মূল্য নির্ধারণের সীমায় ক্ষুব্ধ হয়ে তারা জানান,গাছ দুটো বিক্রি করলেও প্রায় লাখ টাকা দাম পাওয়া যাবে। গাছগুলো বিপ্লবের জীম্মায় রাখা কথা বলেও আসলে উপজেলা চত্তর থেকে গাছগুলো সরিয়ে ফেলো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
তারা আরো বলেন গাছ কেটে বিক্রয় করে টাকা হজম হয়েগেছে। এখন সাংবাদিকরা জেনে গেছে বলে স্থানীয় একটি স মিলে বন কর্মকর্তা কে নিয়ে গিয়ে একটি শিশুগাছ দেখায় । কিন্তু মেহগুণী গাছ সেখানে দেখাতে পারেনি।
স্থানীয় একআওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্চুক, তিনি বলেন, এই বিপ্লবকে, কেন তিনি সরকারী গাছ কাটবে । সে মাষ্টার রোলে থাকা ইউএনও মহোদয়ের বাড়ির মালি। সেই ক্ষমতা বলে তিনি সরকারী গাছ কেটেছে বলে আমি মনে করি। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও তিনি ইউএনও বাড়িতে কাজ করার সুবাদে উপজেলা পরিষদে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কথাবার্তার মাধ্যেমে বিভিন্ন সময় লাঙ্চিত করেন এবং তাদের হুমকি দিয়ে বলে আমার কিছুই করতে পারবেন না কারণ আমি ইউএনও বাড়িতে কাজ করি। তিনি বলেন ,মাসুদ একজন মাদক সেবন কারী ।
এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা বন কর্মকর্তা জাহিদ জানান, গত মাসিক সভার দিন তারা উপজেলা কর্মকর্তাদের সাথে স্থানীয় একটি স মিলে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি শিশুগাছের ৩ টি লগ দেখানো হয়েছে। লগগুলো মাপজোক করে তারা মূল্য নির্ধারণ করলেও এখনও বিভাগীয় অফিসের মাধ্যমে তা পাশ হয়নি। তবে কোন মেহগিনি গাছের মূল্যনির্ধারণ তারা করেননি বলে নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় ও অভিযোগকারীর দাবী,মাসুদ রানা বেশ কিছুদিন থেকে ইউএনওর বাসায় কাজ করে দেন বিধায় তাকে বাঁচাতে ইউএনও দায় নিয়েছেন। অনতিবিলম্বে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে গাছ দুটি উদ্ধার,সঠিক মূল্য নির্ধারণ ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
জেএন