নিজস্ব প্রতিবেদক : মহাদেবপুরে জোরপূর্বক ২২ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। জমি দখলের খবর জানতে জানতে পেরে ভুক্তভোগীরা পুলিশের দ্বারস্থ হলেও মহাদেবপুর থানা পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেনি বলেও অভিযোগ করা হয়। বুধবার রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজির) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মহাদেবপুর থানার মহাদেবপুর গ্রামের মোজাফফর হোসেনের ছেলে মকছেদ আলী। অভিযোগ পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছন ডিআইজি। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর মহাদেবপুর থানা সদরের মোকছেদ আলীর পিতা মৃত মোজাফফর হোসেন ১৯৭৮ সালে বাড়ির পাশে ৭.১২ একর জমি কিনে এবং তখন থেকেই সেই জমিতে বসবাস করছেন তারা। ওই জমির উপরে বাগান
গরু ও মুরগীর খামার স্থাপন ও ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে ভোগ দখল করে আসছেন তারা। তার পিতার মৃত্যুর পর তিনি ও তার ভাই-বোনেরা ওই জমি ভোগ দখল করে আসছেন। তৎকালীন সময়ে জমি বিক্রির পর বিক্রেতা ভারত চলে গেলে পরবর্তীতে তার ওয়ারিশরা তাদের গ্রামের আবু তাহের মন্ডল এর কাছে পুনরায় জমিটি বিক্রি করে। আবু তাহের মন্ডল দ্বিতীয় দলিলে জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে ১৯৯৫ সালে মামলা করেন। এরপর তিনি মারা যাওয়ার পর তার ওয়ারিশরা মালিকানা দাবী মামলায় হেরে গেলে অবৈধ উপায়ে জমি দখলের অপচেষ্টা শুরু করে। গত ৪২ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে জমিতে থাকার পরেও চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ১৬ তারিখ আনুমানিক ভোর চারটায় মৃত ইসলামের ছেলে পলাশ, শহিদুল, এনামুল, আজাদ, বল্টু, লুৎফরের ছেলে মানিক, জাহাঙ্গীর, বুলবুল ও
সাজ্জাদসহ শতাধিক লোকজন নিয়ে তারা জমিতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক টিনের চালা টিনের বেড়া নির্মাণ শুরু করে। এ সময় প্রাণের ভয়ে তাদের সামনে কেউ যেতে পারেনি। ভুক্তভোগীরা বিষয়টি জানতে পেরে ভোর সাড়ে চারটার দিকে মহাদেবপুর থানার ওসির সরকারি মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানান। একাধিকবার মোবাইলে জানালেও থানা থেকে মাত্র ৫০০ গজ দূরত্বের ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে সকাল সাতটার দিকে। তার ভগ্নিপতি আবদুর রহমান ও তার স্বজনদের নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশের এসআইকে তখন প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে দেখতে পান তারা। ওই দিন বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত জমিতে অবস্থান করে টিনের বেড়া নির্মাণ শেষ করে প্রতিপক্ষরা। দুপুর ১২ টায় তিনজন সাদা পোশাকধারী পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে চলে যান। সেদিন থেকে তারা লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে অবস্থান করে ও চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং জমিতে গেলে হত্যা করা এমন
হুমকি দেয়। শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন ওসির কাছে বারবার মহায়তা চাইলেও অজ্ঞাত কারনে কোন আইনি সহায়তা করেননি ওসি। পরে ১৯ জানুয়ারী সকালে আদালতে আবেদন করলে আদালত ১৪৪ ধারা জারি করে। আদালতের নির্দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জমিতে না যাওয়ার নির্দেশ দেন সার্কেল অফিস। সেই সাথে পূর্ব থেকে তাদের মুরগি ও গরুর খামার গুলি খাবার জন্য প্রদানের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও বলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা অবৈধভাবে নির্মিত চালায় এখনো অবস্থান করছে। বাধ্য হয়ে বুধবার ভুক্তভোগীরা রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগ পাওযার পর রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, পুলিশ কোন অন্যায় কাজ হতে দেবে না। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
আর/এস