মহাদেবপুর প্রতিনিধি : প্রকৃতির পালাবদলে মহাদেবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আম গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আমের মুকুলের মিষ্টি সুবাসে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি! জানান দিচ্ছে মধুুমাসের আগমনী বার্তা। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। সেই সুমিষ্ট গন্ধ মানুষের মন ও প্রাণকে বিমোহিত করে তুলছে। গত সপ্তাহ থেকেই আম গাছে মুকুল দেখা দিতে শুরু করেছে। এখন সময়ের ব্যবধানে তা আরো বাড়ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় সব গাছে মুকুল আসতে শুরু করবে। সংশ্লিষ্টদের মতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ও সময়মতো পরিচর্যা করা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভাল ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আমচাষীরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। অবশ্য গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই বাগান পরিচর্যা করছেন চাষীরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, মহাদেবপুর উপজেলা ধানের রাজ্য বলে খ্যাত। কৃষকদের বাণিজ্যিকভাবে আম চাষে তেমন আগ্রহ না থাকলেও গত ৪-৫ বছরে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৫’শ হেক্টর জমিতে বারি আম-৪, বারি আম-৫, আমরুপালি, ফজলি, খিড়সা, ল্যাংড়া, রাজভোগ ও গোপালভোগসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের আম বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক আম চাষ না হলেও পরিত্যাক্ত জমি এবং বাড়ির আশে-পাশের জায়গাগুলোতে অনেক গাছ রয়েছে।
উপজেলার উত্তরগ্রাম গ্রামের আমচাষী হারুন বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। কয়েক দিনের মধ্যে গাছগুলোতে পর্যাপ্ত মুকুল আসবে। আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে আমের বাম্পার ফলন হবে।’ উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের আমচাষী তোতা বলেন, ‘বছর জুড়ে বাগান পরিচর্যা করায় প্রতি বছরই আমের ভাল ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে গাছে মুকুল আসার ১৫-২০ দিন আগেই পুরো গাছ সাইপারম্যাক্সিন ও কার্বারিল গ্রæপের কীটনাশক দিয়ে ভালভাবে স্প্রে করে গাছ ধুয়ে দিয়েছি। এতে গাছে বাস করা হপার বা শোষক জাতীয় পোকাসহ অন্যান্য পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যদি সঠিক সময়ে হপার বা শোষক পোকা দমন করা না যায় তাহলে আমের ফলন কমে যায়।’
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ‘আম গাছে মুকুল আসার আগে এবং আমের গুটি হবার পর নিয়মিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে আমসহ অন্যান্য ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
এম/কে