ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মানুষ অসুস্থ্য হলে সুস্থ্য হওয়ার আহাজারি নিয়ে ছুটেন ডাক্তারের কাছে। একজন সরকার অনুমোদিত ডাক্তার রুগীটি নানা ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ঔষধ লিখে দেন। রুগীটির কত শক্তির মাত্রা ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে বয়স অনুযায়ী সেটাও উল্লেখ করেন ব্যবস্থাপত্রে। তাছাড়া ঔষুধের ফর্মেসী দিতে হলে যোগ্যতা লাগে ফার্মাসিস্ট ডিগ্রী এবং ড্রাগ লাইসেন্স। এ গুরুত্বপূর্ণ সর্তক অবস্থা থেকে একজন রুগীকে ঔষধ দিতে হয়। ঔষধের গ্রুপ বা মাত্রা কম-বেশী হলে একজন মানুষ সুস্থ্য না হয়ে মৃত্যু ঝুঁকি থাকে। সরকার অনুমোদিত ডাক্তারের খেয়ালীপনায় অনেকের মূত্যু খবরও রয়েছে।
এত সবের পরও খুব সহজ ভাবে ঔষধের পসরা সাজিয়ে ভোলাহাট উপজেলার দুটি হাটে ২০ বছর ধরে প্রকাশ্য চলছে কথিত ডাক্তার দিয়ে মানুষ ও পুশু চিকিৎসার মহাৎসব। উপজেলার বড়গাছী হাট বৃহস্পতিবার এবং গোহালবাড়ী রবিবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। এদুটি হাটে উচ্চ শক্তির মানুষের ও একই সাথে পশুর ঔষধসহ গাছ গাছাড়া দিয়ে ২০ বছর ধরে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে আনাড়ি অশিক্ষিত বেশ কিছু ব্যক্তি। অশিক্ষিত মানুষ বিভিন্ন গ্রুপের এ্যলোপ্যাথি, পশুর বিভিন্ন প্রকার ঔষধ এবং গাছ দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে বিক্রয় করছে ঔষধ। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ঔষধ বিক্রয় করলেও দেখেও না দেখার ভান করছেন স্থানীয় প্রশাসন।
সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বড়গাছী হাটে শিবগঞ্জ উপজেলার কাশিয়াবাড়ী গ্রামের জাহান আলী(৬৫), ভোলাহাট উপজেলার বড়গাছী গ্রামের মতিউর রহমান(২২), জামবাড়ীয়া কৃষ্টপুর গ্রামেরআব্দুর রহিমের ছেলে আনারুল(৩৮) ও ছোট জামবাড়ীয়া গ্রামের আঃ গফুরের ছেলে ভাদু মন্ডল(৫৫) পসরা বসিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের মানুষ ও পশুর ঔষধসহ গাছামু ঔষধ বিক্রয় করছেন। এদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা কেউ ৪ বছর কেউ কেউ ১০ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত এ ধরণের ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তাদের কোন প্রশিক্ষণ বা পড়া-শুনা আছে কিনা জানতে চাইল তারা বলেন, এ সবের কিছুই নাই তাদের কাছে।
তারা ঔষধ বিক্রয় করার সময় কোন প্রকার প্রশাসনিক সমস্যা কখনও হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, ড্রাগসুপার মাঝে মাঝে এসে টাকা নিয়ে যায় বলে জানান। এছাড়া যারা ঔষধ ক্রয় করে তারা কোন চিকিৎসকের প্রেসক্রেপসন নিয়ে এসে ঔষধ ক্রয় করে কিনা জানাতে চাইলে তারা বলেন, ক্রেতারা এসে তাদেও ইচ্ছে মত ঔষধ ক্রয় করে নিয়ে যায়।
এ সব ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আওয়াল জানান, তাদের জন্মের পর থেকে ঔষধ বিক্রয় দেখে আসছেন। তারা ড্রাগসুপারকে মাঝে মাঝে টাকা দেয়। এছাড়া রহনপুরসহ বিভিন্ন হাটেও চলে ঔষধ বিক্রয়। এদিকে স্থানীয়রা জানান, এ সব আনাড়ি ব্যক্তি না বুঝে না জেনে যে সব ঔষধ বিক্রয় করছে তাতে যে কোন সময় ঔষধ খেয়ে মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারে বলে অভিযোগ করেন। তারা এ সব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেন।
এদিকে এ উপজেলা অনেক হাতুড়ে ডাক্তারের উৎপাতে অনেক অসচেতন মানুষ চিকিৎসা নিয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে। অশিক্ষিত এ সব কথিত ডাক্তারের হাটে-বাজারে ঔষধ বিক্রয় ও হাতুড়ে ডাক্তারদের চিকিৎসা করা কতটুকু আইন সম্মত জানতে চাইলে উপজেলা প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এদেও বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে যথযথ নিয়মানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানা। একই ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুব হাসান বলেন,সমগ্র ভোলাহাটের গ্রামগঞ্জে হাটে বাজারে অবৈধ ভাবে মানুষকে যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে বা যারা প্রদান করছে তা আইনত দন্ডনিয় বা সমর্থযোগ্য নয়। এ ধারা অব্যহত থাকলে সমগ্র জনগোষ্টি মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। এ পরিস্থিতি বন্ধ হওয়া উচিত।
একই বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ এসএসএম খাইরুল আতার্তুক বলেন, এ ধরণের ঔষধ বিক্রয়ের আইনগত কোন ভিত্তি নাই। এটির দায়িত্ব ড্রাগ সুপারে দায়িত্ব। ড্রাগ সুপার দেখবে বলে জানান। একই বিষয় নিয়ে ড্রাগসুপার আব্দুল মালেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে আগামী সপপ্তাহে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলে তাড়াহুড় করে মিটিং বসে আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন