সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুধু ইনকোয়ারি (তদন্ত) করে বসে না থেকে তার জন্য মনিটরিং সেলসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৪ মার্চ) সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে করা রিটের শুনানিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।
সকাল সোয়া ১১টায় রিটের শুনানি শুরু করেন আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবির। পরে আদালত রিট আবেদনকারীর চাওয়া অংশ পড়ে দেখেন। কিছু অসঙ্গতি দেখে আদালত রিটকারী আইনজীবীকে মনে করিয়ে দেন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সয়াবিনের দামের বিষয়টি নজরে আনেন। আদালত বলেন, বাজারে যে মূল্যে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে তার সঠিক প্রাইজের ডকুমেন্টস আনা দরকার। ডিউ ইনকোয়ারি (তদন্ত) করার নোটিশ নিয়ে আসেন। তারা তদন্ত করে কি রিপোর্ট দিচ্ছে সেটি দেখতে হবে।
আদালত আরও বলেন, ইনকোয়ারি (তদন্ত) করে বসে থাকলে চলবে না। ভোক্তা অধিকার আইনে শাস্তির বিষয়ে শক্ত কিছু নেই। আইনে বলেছে রুলস করার জন্য, কিন্তু আপনারা করেন নাই।
রোববার শুনানির এক পর্যায়ে আদালত রিটকারীদের বলেন, আমরা এমন একটি আদেশ দিতে চাই যেটি সারাদেশের সব মানুষের কাজে আসে। আপনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের আইনটিও ভালো করে দেখে আসুন। আমরা এমন রুল দিতে চাই যাতে করে দেশের সব মানুষের উপকারে আসে। ভোক্তা অধিকার আইনটি দুর্বল বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
গত ৩ মার্চ সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন তিন আইনজীবী। তারা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন। পরে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ না দিয়ে রিট করার পরামর্শ দেন।
পরে গত ৬ মার্চ ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা চেয়ে তিন আইনজীবী হাইকোর্ট ডিভিশনে রিটটি দায়ের করেন। তারা হলেন- অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহিদুল কবীর এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ উল্লাহ। বাণিজ্য সচিব, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সয়াবিন তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিয়েছেন। ২ মার্চ বাজারে ক্রেতাদের কাছ থেকে এক লিটার খোলা সয়াবিনের দাম রাখা হয়েছে ১৭৫ টাকা। অথচ, সরকার এক লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
আদালত আইনজীবীদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় রিট আবেদন দাখিল করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে রিটের আবেদন জানান।
রিটকারীদের পক্ষে সেদিন মুহিদুল কবির আদালতকে বলেন, একটু তাড়াহুড়ো করায় আবেদনে ভুলত্রুটি হয়ে গেছে। পরে আদালত এ বিষয়ে সংশোধন করে পরদিন মঙ্গলবার আসতে বলেন। ৮ মার্চ রিট আবেদনটি শুনানির জন্য ১৩ মার্চ দিন ধার্য করা হয়।
রোববার দুপুরের দিকে শুনানির জন্য আবেদনটি তালিকায় আসে। এর আগে একটি সম্পূরক আবেদন দেন রিটকারী আইনজীবী মনির হোসেন।
বিএ/