রাবি প্রতিনিধি: নিয়োগ বাণিজ্য, অসৎ, দুর্নীতির অভিযোগ এনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে ‘লালকার্ড’ দেখিয়ে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচির পালন করা হয়। এর আগে সকাল দশটায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থগারের সামনে একই দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করে তারা। এদিকে ‘দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজ’ পৃথক ভাবে বর্তমান প্রশাসনের অপসারণ চেয়ে সকাল ১১টায় শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে টানা তৃতীয় দিনের মত মানববন্ধন করেছেন। পরে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা।
লাল কার্ড প্রদর্শনী কর্মসূচিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি রিদম শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, এই প্রশাসনের প্রতিটি পর্যায় দুর্নীতিতে ছেঁয়ে গেছে। সাত পুুকুর গবেষণা প্রকল্প, ক্যাম্পাস সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বিদেশ থেকে ঘাস আমদানি করে ৮৪ লক্ষ টাকা লোপাট। শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যসহ স্বজনপ্রীতিতে নিমজ্জিত। এটা প্রমাণিত হওয়ার পরও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভিসি ও প্রো-ভিসি পদে বহাল রয়েছে কিভাবে এটা আমাদের বোধগম্য নয়। এভাবে শিক্ষা ও দুর্নীতি এক সঙ্গে চলতে পারে না। তাই আমরা বর্তমান দুর্নীতিবাজ প্রশাসনকে লাল কার্ডের মাধ্যমে এ ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি।
বক্তারা আরও বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয় নিয়ে ভিসির নিকট কথা বলেছি। কিন্তু তিনি কোন প্রশ্নের উত্তর দেন নি। বরং উল্টো ছাত্রদের নিকট জানতে চাওয়ার অধিকার কাছে কি না ? এমন প্রসঙ্গ নিয়ে আসেন। এর মাধ্যমে ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত ও জবাবদিহিতামূলক প্রতিষ্ঠানকে স্বৈরচারের আস্তানায় পরিণত করেছেন। ভিসি, প্রো-ভিসি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান। আগামী রোববার বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করে সংহতি জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক।
রাবি দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে শিক্ষক সমতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে অংশ নেন, আইন অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, সাবেক ডীন প্রফেসর মামুনুর রশীদ তালুকদার, বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. হাবীবুর রহমান, প্রফেসর শাহরিয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান, সঙ্গীত বিভাগের সাবেক সভাপতি অমিত রায়সহ শতাধিক শিক্ষক।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর এক্রাম উল্লাহ বলেন, দুর্নীতি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চাই। যে কেউ ভিসি হোক সেটা বিষয় নয়। বর্তমান প্রশাসনের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রমাণ মিলেছে এবং সবার নিকট স্পষ্ট সুতরাং তাদের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতেই থাকবে। ভবিষ্যতে প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
খবর২৪ঘণ্টা, এমকে