1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
'ভারত থেকে বাংলাদেশে গোপনে পুশব্যাক চলছে' - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন

‘ভারত থেকে বাংলাদেশে গোপনে পুশব্যাক চলছে’

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯

খবর২৪ঘণ্টা  ডেস্ক: ভারতের নানা প্রান্ত থেকে অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে আটক নারী-পুরুষদের দলে দলে কলকাতায় নিয়ে এসে গোপনে ও জোর করে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করছে।
গত শনিবার রাতে দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে ট্রেনে করে নিয়ে আসা কথিত বাংলাদেশীদের এমনই একটি দলকে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও মানবাধিকার কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তাদের সাময়িক আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে।

তবে এর আগেই বেশ কয়েক দফা ‘পুশব্যাক’ করা হয়ে গেছে বলে তারা জানাচ্ছেন – আর ভারতের সরকার, পুলিশ বা সীমান্ত-রক্ষী বাহিনী গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে।

বস্তুত গত সপ্তাহেই কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিন-রাতের টেস্ট উদ্বোধন করতে এসেছিলেন।
অভিযোগ উঠছে, ঠিক সে সময় নাগাদই শহরের অন্য প্রান্তে কথিত বাংলাদেশীদের নিয়ে এসে বিএসএফের মারফত তাদের সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে।
পশ্চিমবঙ্গে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি বা এপিডিআরের সাধারণ সম্পাদক ধীরাজ সেনগুপ্তর কথায়, “ঘটনাটা যা ঘটেছে তা অত্যন্ত খারাপ হয়েছে বলেই আমরা রিপোর্ট পেয়েছি।”

তিনি বলেন, “এই কথিত বাংলাদেশীদের এনে রাতের বেলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে তুলে দিলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।”
“পরদিন সকালে বিএসএফের হাতে এদের হস্তান্তর করার পর ৩২ জনের একটা দলকে এরা সীমান্ত পার করিয়ে দেয় বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে।”
“আরও জেনেছি, বাংলাদেশে ঢোকার পর ভারত থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী বলে এদের নাকি সেখানেও জেলে পোরা হয়েছে”, বলছিলেন ধীরাজ সেনগুপ্ত।
এই কথিত বাংলাদেশীদের সবচেয়ে বড় দলটি শনিবার বিকেলে কলকাতার কাছেই হাওড়া রেলস্টেশনে এসে পৌঁছায়।

এদেরকে যাতে কিছুতেই বিএসএফের হাতে তুলে না-দেওয়া হয় সেই দাবিতে মানবাধিকার কর্মীরা স্টেশনে আগে থেকেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন – আর সেখানে ছিলেন বিজ্ঞানী ও অ্যাক্টিভিস্ট নিশা বিশ্বাস।

নিশা বিশ্বাস বিবিসিকে বলেছেন, “ব্যাঙ্গালোর থেকে একটা বিশেষ ট্রেনের দুটো কামরা রিজার্ভ করে ষাট জনের মতো কথিত বাংলাদেশীদের হাওড়াতে নিয়ে আসা হয়।”
তিনি বলেন, “যতজন লোক ছিল দলটায়, প্রায় ততজনই পুলিশ ছিল সঙ্গে। আর উর্দিতে নন, তারা সবাই ছিলেন সাদা পোশাকে।”

“ট্রেনের সব যাত্রী নেমে যাওয়ার পর এই দলটাকে এক লাইন করে হাঁটিয়ে নিচে নামানো হয়। প্ল্যাটফর্মের পাশে দুটো পুলিশ ভ্যানও দাঁড়িয়ে ছিল, জানি না ওদের নিয়ে যেতেই সেগুলো এসেছিল কিনা!”

“তবে আমরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলাম বলে তাদের ভ্যানে তোলার চেষ্টা করা হয়নি। পুরো দলটাকে এক কোনায় মাথাগুনতি করে বসিয়ে রাখা হয়।”

“ট্রেন এসেছে বিকেল চারটেয়, আর রাত দশটা-সাড়ে দশটা অবধি ওদের ওই কোনাতেই ঠায় বসিয়ে রাখা হয়। আমরাও ততক্ষণ ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে দুটো পুলিশ ভ্যানে করে ছেলে আর মেয়েদের আলাদা করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলেই খবর পেয়েছি,” জানাচ্ছেন নিশা বিশ্বাস।

ব্যাঙ্গালোর থেকে হাওড়া পর্যন্ত তাদের ওই ট্রেন-যাত্রায় এই কথিত বাংলাদেশীদের ফলো করেছেন ‘দ্য ফেডারেল’ নামের একটি এনজিওর প্রতিবেদক সুদীপ্ত মণ্ডল।
মাঝপথে তিনি তাদের কয়েকজনের সঙ্গে ট্রেনের জানালা দিয়ে কথাও বলতে পেরেছেন। তারা কেউ বলেছেন, “আল্লাহর দয়ায় এখন ভালয় ভালয় দেশে ফিরতে পারলেই বাঁচি।”
কেউ আবার জানিয়েছেন, “আমার ভাইয়ের নাম সাইফুল, ব্যাঙ্গালোরের সেন্ট্রাল জেলে আটক আছে – দেখুন না ওকে ছাড়ানো যায় কি না!”

সুদীপ্ত মণ্ডল নিজেও বিবিসিকে বলেছেন, মাঝপথে এই নারী-পুরুষদের কোথাও নামিয়ে দেওয়া হবে এই জল্পনাও ছিল প্রবল।

তার কথায়, “একজন মহিলা ও একজন পুরুষ সাব-ইনস্পেক্টর, এই দুজন জুনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা এই গোটা দলটার তদারকি করছিলেন। কিন্তু কলকাতায় পৌঁছে এই বাংলাদেশীদের নিয়ে কী করা হবে, তাদেরকে বারবার সে প্রশ্ন করেও কোনও জবাব পাইনি।”
তিনি বলেন, “আর ট্রেন বাংলায় ঢোকার আগে থেকেই জল্পনা শুরু হয়, সংবাদমাধ্যমকে এড়াতে এদের মাঝের কোনও স্টেশনে নামিয়ে নিয়ে সরাসরি বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেরকম কিছু হচ্ছে কিনা, সেটা দেখতে প্রতিটা স্টেশনে নেমেই আমি ওদের কামরার দিকে দৌড়ে যাচ্ছিলাম।”

মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার সাবেক কর্মকর্তা অরিজিৎ সেন মনে করছেন, এখানে ভারতের সবচেয়ে বড় অন্যায়টা হল বিদেশি নাগরিকদের ডিপোর্টেশনের যেটা স্বীকৃত পদ্ধতি, সেটার কোনও পরোয়াই করা হচ্ছে না।

অরিজিৎ সেন বিবিসিকে বলছিলেন, “১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুসারে, এরা যদি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হয়েও থাকে তাহলে আদালতে পেশ করে তারা যে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকেছে সেটা আগে প্রমাণ করা দরকার। তারপর কনস্যুলার অ্যাকসেসের প্রশ্ন আসে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে এদের ডিপোর্ট করার ব্যবস্থা করতে হয়।”

“এটা একটা দীর্ঘ ও সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি, আর এটা করা হলে তবেই কাউকে ডিপোর্ট করা যায়। কিন্তু এরা তো সেই পদ্ধতির ধারে-কাছেও যাচ্ছে না, বরং মনে হচ্ছে এরা যেন একটা ক্লিনিং অপারেশনের মতো কিছু করছে।”

“ক্রিকেট ম্যাচকে ঘিরে যেখানে ভারত-বাংলাদেশ নিবিড় সম্পর্কের কথা বলা হচ্ছে, অথচ তার পাশাপাশি এখানে যে ন্যূনতম মানবাধিকারটুকু নিশ্চিত করা দরকার ছিল সেটা কিন্তু আদৌ হচ্ছে না,” বলছিলেন অরিজিৎ সেন।

ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যের পুলিশ, সরকারি এজেন্সি ও বিএসএফের মধ্যে সমন্বয় ছাড়া এধরনের অপারেশন চালানো সম্ভব নয়।
কিন্তু এই সব সংস্থার সঙ্গে দিনভর নানাভাবে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কেউই এ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি।
সূত্র: বিবিসি

পোস্টটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By Khobor24ghonta Team