খবর২৪ঘণ্টা,আন্তর্জাতি ডেস্ক: ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিজেপি নেতা সুরজ পাল অমুকে গ্রেপ্তার করেছে হরিয়ানার গুরগাঁও থানার পুলিশ। ‘পদ্মাবত’ চলচ্চিত্র নিয়ে দেশব্যাপী হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে অমুকে গতকাল শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়।
‘পদ্মাবত’ চলচ্চিত্র মুক্তির পক্ষে কথা বলায় সুরজ পাল অমু গত নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাক কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। অমু ছিলেন হরিয়ানা রাজ্যের বিজেপির চিফ মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর। মমতাকে হুমকির পর তাঁকে এই পদ থেকে সরিয়ে দেয় বিজেপি।
অমু করণি সেনা নামের একটি উগ্র সংগঠনেরও নেতা। এই সংগঠন ‘পদ্মাবতী’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।
সঞ্জয় লীলা বনসালির ‘পদ্মাবতী’ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন নিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা সরব হয়। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রদর্শনের বিরোধিতায় আন্দোলন ও হুমকি জোরদার হলে ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি) চলচ্চিত্রটির বেশ কিছু জায়গায় কাটছাঁট করে। এর নাম পরিবর্তন করে ‘পদ্মাবত’ দেওয়া হয়।
পরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ‘পদ্মাবত’ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনের অনুমতি দেন। তবে এরপরও গত বুধবার থেকে করণি সেনা ‘পদ্মাবত’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে উপেক্ষা করে গুরগাঁওয়ের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। শিশুদের স্কুলবাসেও হামলা চালায় তারা। যানবাহনেও হামলা চালায়। আর এর নেতৃত্বে ছিলেন এই করণি নেতা অমু।
বৃহস্পতিবার পুলিশ অমুকে আটক করার পর গতকাল শুক্রবার তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এদিনই তাঁকে হরিয়ানার আদালতে তোলা হলে আদালত অমুকে চার দিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছেন।
সঞ্জয় লীলা বনসালির ‘পদ্মাবতী’ চলচ্চিত্রটির মুক্তি নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের ইন্ধনে সারা ভারত যখন তোলপাড় হচ্ছিল, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ‘পদ্মাবতী’র পাশে দাঁড়ান। তিনি ঘোষণা দেন, পশ্চিমবঙ্গে ‘পদ্মাবতী’কে স্বাগত। এরপরেই হরিয়ানার বিজেপি নেতা সুরুজ পাল অমু মমতাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তাঁর নাক কেটে দেওয়া হবে। তিনি মমতাকে রামায়ণে বর্ণিত রাবণের বোন শূর্পণখার সঙ্গেও তুলনা করেন।
মমতাকে হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত হননি অমু; এর আগে ওই নেতা ‘পদ্মাবতী’র নায়িকা দীপিকা পাড়ুকোন এবং পরিচালক সঞ্জয়লীলা বনসালির মাথা কাটার জন্যও ১০ কোটি রুপি পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এরপর বনসালির ভক্তরা সুরুজ পাল অমুর বিরুদ্ধে গুরগাঁও থানায় একটি মামলা করেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ