খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: পাট আমাদের জাতীয় সম্পদ। পাট আমাদের সোনালি আশ। যে পাট রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়, সেই পাট শিল্পকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো বিএনপি। ১৯৯৩ সালে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে পাটশিল্পকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করেছিল। এজন্যই তারা পাটকলগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় পাট দিবস’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার (০৬ মার্চ) সকালে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে দেশের সব পাটকল বন্ধ করে দিয়েছিল। এর উদ্দেশ্যই ছিল পাকিস্তানকে পাট শিল্পে সমৃদ্ধ করা। আর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী ৯১ সালে ক্ষমতায় এসে রাজাকার যুদ্ধাপরাধী নিজামীকে শিল্প ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে বসিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দুটি খাতকে ধ্বংস করেছিলেন। এর কারণ, তারা পেয়ারে পাকিস্তান, তাদের অন্তরে বাংলাদেশ নেই।
তিনি বলেন, পাট দিয়েই পাকিস্তান সরকার তাদের উন্নয়ন করেছে। বাংলাদেশ অংশে কোনো উন্নয়ন করেনি। এরই প্রতিবাদ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। তিনি ৬ দফা দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলেও শাসন ক্ষমতা হাতে নেবে, পশ্চিম পাকিস্তানিরা তা মেনে নেয়নি। বিপরীতে জুলুম-নির্যাতন বাড়িয়েছে। এরপরই ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা সেই ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দিলেন। তারই আহ্বানে আমরা স্বাধীন দেশ পেলাম।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর যুদ্ধবিধস্ত দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নজর দেন জাতির পিতা। তিনি বন্ধ সব কলকারখানা চালু করে জাতীয়করণ করেন। এর মধ্যে পাট শিল্প ছিল অন্যতম। তিনি সোনালী আঁশের স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু, আমাদের দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হলো। এরপরই আমাদের সোনালী দিনের আশা অন্ধকারে নিমজ্জিত হলো।
পরে পাট দিবস উপলক্ষ্যে পাটপণ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মেলায় ২৩৫ রকমের বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি হবে। প্রদর্শনী চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত।
আগামী ৯ মার্চ রাজধানীর খামারবাড়ীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে দিবসের মূল অনুষ্ঠান এবং ৯ থেকে ১১ মার্চ পাটপণ্য মেলার আয়োজন করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে এর আগে গত ২ মার্চ শুক্রবার মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে ময়মনসিংহ হয়ে জামালপুর পর্যন্ত রোড-শো অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ৩ মার্চ শনিবার হাতিরঝিলে নৌ-র্যালি, ৪ মার্চ রোববার জাতীয় যাদুঘর মিলনায়তনে কবিতা পাঠের আসর, ৫ মার্চ সোমবার সিরডাপ মিলনায়তনে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
পাট দিবসের গুরুত্ব ও পাট সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে স্কুলের শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতা এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। দুই গ্রুপে এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ছয়জনের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ১১টি ক্যাটাগরিতে আরো ১২ জন ব্যক্তির হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যেকে সামনে রেখে মঙ্গলবা সারাদেশে উদযাপন হচ্ছে জাতীয় পাট দিবস। দেশে দ্বিতীয়বারের মতো পালিত হচ্ছে এ দিবস।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ