নিজস্ব প্রতিবেদক :
পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই দীর্ঘ সাত ঘন্টা ধরে বিদ্যুৎবিহীন ছিল রাজশাহী মহানগরীর বেশ কিছু এলাকা। এতে নগরবাসী চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেক এলাকাতে পানি সরবরাহও বন্ধ ছিল। সরকারী ছুটির দিনে বিদ্যুৎ ও পানি না পাওয়ায় নগরবাসীর ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। শুক্রবার ভোর পৌণে ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দীর্ঘ সাত ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখায় নগরবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার ভোর পৌণে ৬টার দিকে একযোগে নগরীর অনেক এলাকাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। দুপুর ১টার দিকে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হলেও মাঝে মধ্যে টেনে নেওয়া হয়। এ কারণে নগরবাসী চরম হয়রানির মধ্যে পড়েন। বিশেষ করে যারা বিদ্যুতে রান্না করেন ও সাপ্লাই পানি দিয়ে সংসারের প্রয়োজনীয় কাজ করেন তারা ব্যাপক হয়রানির মধ্যে পড়েন। সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় আরো বেশি সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় এসব গ্রাহকদের। সরকারি ছুটির এ দিনটিতে অনেকেই জামা-কাপড় পরিস্কারসহ অনেক প্রয়োজনীয় কাজ করেন। কিন্ত এদিন কিছুই করতে পারেন নি তারা।
বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকার কারণে ওই সমস্ত এলাকায় পানি সরবরাহও বন্ধ ছিল। পানি না থাকায় নগরবাসী আরো সমস্যার মধ্যে পড়ে। এ নিয়ে ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়ে সাধারণ মানুষরা। আর বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় অনেকে রান্নাও করতে পারেনি। পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখায় জনগের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরীর হড়গ্রাম পূর্বপাড়া এলাকার এক গ্রাহক নাম না প্রকাশ করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, আগে থেকে কোন ঘোষণা দেওয়া ছাড়াই শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ টেনে রাখা হয়।
হঠাৎ করে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অনেক সমস্যা হয়েছে। এমনকি রান্না করাও সম্ভব হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের কাজ থাকতেই পারে। কিন্ত ঘোষণা দেওয়া ছাড়া এভাবে বিদ্যুৎ টেনে রাখা ঠিক হয়নি। এটা বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের গাফিলতি বলে আরো অভিযোগ করেন।
শাহিন নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, শুক্রবার বিদ্যুৎ না থাকার কারণে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। গরমের শুরুতেই এমনভাবে বিদ্যুৎ টেনে রাখলে সামনে তো আরো সময় পড়ে রয়েছে। ঘোষণা ছাড়া এভাবে বিদ্যুৎ টেনে রাখা ঠিক হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এটা ঠিক নয়। আমরা যারা বিদ্যুতেই রান্নাসহ প্রয়োজনীয় কাজ সেরে থাকে তাদের জন্য অনেক সমস্যা। তাই তিনি ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ টানতে হলে আগে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানান।
শুধু ওই তিন গ্রাহকই নয় নগরীর অনেক গ্রাহক পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই বিদ্যুৎ টানা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাজশাহী পিডিবির তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসিনা দিলরুবা বলেন, ঘোষণা ছাড়া বিদ্যুৎ টেনে রাখা হয়নি মন্তব্য করে বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিং নেই। প্রজেক্টের কাজ চলছে। বিভিন্ন এলাকায় ট্রান্সফরমার বসানোর কাজ চলছে। এ জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
শুক্রবারের দিন হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে কাজ করা হয়েছে। পুরো নগরী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়নি। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ট্রান্সফরমার বসানো ও তার জোড়া লাগানোর জন্য সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছিল। আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন। দুপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার পরে আবার ঘন ঘর টানা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা লোডশেডিংয়ের জন্য টানা হয়েছে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে