শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনয়র পাওয়া মেয়র প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুন্ডুর বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১ ডজনেরো বেশী মামলা রয়েছে। এরমধ্যে চারটি মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন মামলা না থাকলেও তার বার্ষিক আয় ও সম্পদের পরিমাণ বেশি। এছাড়া এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্ব সব প্রার্থীই পেশায় ব্যবসায়ী।
এদিকে অন্যান্য প্রার্থীদের স্ত্রীদের তুলনায় বিএনপি প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুন্ডু’র স্ত্রী সবচেয়ে বেশি ধর্ণাঢ্য। তার নগদ টাকার পরিমান ২১ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ টাকা। রয়েছে ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার। ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও সমপরিমাণ টাকার আসবাবপত্র। সেই সঙ্গে তার নামে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের ৮৩ দশমিক ৫০ শতক অকৃষি জমি রয়েছে। যা অন্য কোন প্রার্থীর স্ত্রীর নেই। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা মেয়র প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। পৌর শহরের দক্ষিণসাহাপাড়ার বাসিন্দা তিনি। মৃত তফের উদ্দীন ও ছালেহা বেগমের একমাত্র সন্তান। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাশ। পেশা ব্যবসা ও পরামর্শক। তাঁর বার্ষিক আয় ৮লাখ ১৩হাজার টাকা। এরমধ্যে কৃষি খাত থেকে ৫৩ হাজার, ব্যবসা থেকে ৩লাখ ৮০হাজার ও পরাশর্ম থেকে ৪লাখ ৮০হাজার টাকা। তার নামে কোনো মামলা নেই। নগদ টাকা ও ব্যবসার পুঁজি ৫২লাখ ৯৭হাজার ৮৪৮টাকা। ১৪লাখ ৫০হাজার টাকা দামের একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। কৃষি জমি রয়েছে ১০বিঘা এবং স্বর্ণ ও অন্যান্য অলংকারের পরিমান ৫হাজার টাকা। ইলেকট্রিক সামগ্রীর মধ্যে টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান, খাট, সোফা, ওয়ার ড্রয়ার থাকলেও এসবের মূল্য অজানা। কোনো দায়দেনা নেই। তবে হলফনামায় বর্তমান স্ত্রীর নামে সম্পদের কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল(বিএনপি)’র দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুন্ডু পেশায় একজন ব্যবসায়ী। শহরের স্যানালপাড়ার বাসিন্দা ভবেন্দ্র নাথ কুন্ডু ও অপর্ণা কুÐুর ছেলে। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাশ। ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় ২লাখ ৫০হাজার টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ১৪লাখ ৩৬হাজার ৭২১টাকা। ৫ লাখ টাকা দামের একটি প্রাইভেটকার আছে। তার স্ত্রীর ২৫ ভরি স্বর্ণ আছে । ইলেকট্রিক সামগ্রীর মধ্যে ১লাখ ৬০ হাজার টাকার রঙিন টিভি, ফ্রিজ, এসি ও কম্পিউটার এবং সমপরিমাণ টাকার বিভিন্ন আসবাবপত্র রয়েছে। কৃষি জমি না থাকলেও অকৃষি জমি রয়েছে ৩৭ শতক। যার আনুমানিক মূল্যধরা হয়েছে ৫৫হাজার ৪২৯টাকা। আর ওয়ারিশসূত্রে বাবার নিকট থেকে পেয়েছেন টিনসেড বাড়ি। মূল্য ২লাখ ৫০হাজার টাকা। বিএনপির
দলীয় এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোট মামলা রয়েছে ১৪টি। এরমধ্যে ১০টি মামলায় নিস্পত্তি হয়েছে। এসব মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি। তবে এখনও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৪টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন জানে আলম খোকা। তিনি এই পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মৃত গাজিউর রহমানের ছেলে। মাতার নাম-মৃত হাজেরা বেওয়া। বর্তমানে শহরের টাউন কলোনীর বাসিন্দা। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাশ। বার্ষিক আয় ৪লাখ ৮হাজার টাকা। এরমধ্যে কৃষি জমি থেকে ৫৫ হাজার ও ব্যবসা থেকে ৩লাখ ৫৩হাজার টাকা। নিজের কাছে নগদ টাকা রয়েছে ১লাখ ১৮হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা রয়েছে
৫০হাজার টাকা। ২৫হাজার টাকার স্বর্ণালংকার ও পাথর রয়েছে। ৫০হাজার টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রীর মধ্যে টিভি, ফ্রিজ ও ফ্যান এবং আছে ৩০হাজার টাকার বিভিন্ন আসবাবপত্র। ১০দশমিক ৫৫শতক কৃষি আর ৩দশমিক ৫২ শতক অকৃষি জমির মালিক তিনি। এসবের মূল্য অজানা। তবে বগুড়া শহরের সুত্রাপুর মৌজায় জোবেদা টাওয়ারের তৃতীয়তলায় ৮৮০ বর্গ ফুট ফ্লাট কিনেছেন। যার মূল্য ১৪ লাখ ৩২হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর হাতে নগদ ১৪লাখ টাকা রয়েছে। ব্যাংকে জমা রাখা আছে ৭লাখ টাকা। এছাড়া ২লাখ টাকার ১৫ভরি স্বর্ণালংকার, ৫০হাজার টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী ও সমপরিমান টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে একটি দুর্নীতি মামলা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। আর বাকি সব মামলায় খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একজন প্রার্থী ইমরান কামাল খান। তিনি একজন জুয়েলার্স ব্যবসায়ী। শহরের টাউন কলোনী এলাকার আব্দুস সালাম খান ও মনোয়ারা বেগমের ছেলে । স্ব-শিক্ষিত এই প্রার্থীর বার্ষিক আয় ৪লাখ ৫হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ টাকা রয়েছে ১লাখ ৫০হাজার টাকা। কৃষি জমির পরিমাণ ৯শতক। অকৃষি জমির পরিমান ০দশমিক ০৩৮২সহঃ একর। রয়েছে একটি টিনসেড বাড়ি। ইলেকট্রিক সামগ্রীর মধ্যে টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান রয়েছে। মূল্য ৫০হাজার টাকা। খাট-আলমারী, সোফা, শোকেস, চেয়ার-টেবিলসহ রকমারি আসবাবপত্র রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৪০হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে কোনো জায়গা-জমি নেই। তবে ১৫লাখ টাকার ৩০ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এই প্রার্থীর কোনো দায়দেনা নেই। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে তিনিও হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
জেএন