খুলনায় শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শনিবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুদিন আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
১৮ অক্টোবর রাতে খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে শুক্র-শনিবার বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকালে খুলনার বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ।
খুলনা থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। এমনকি দূরপাল্লার কোনো বাসও আসছে না।
দূরদূরান্ত থেকে যাত্রীরা এসে বাস না পেয়ে মলিনমুখে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। রয়েল মোড় হানিফ কাউন্টারের কর্মকর্তা ইয়াসিন বলেন, শুক্রবার ভোর ৬টার পর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় ফের বাস চলাচল শুরু হবে।
একই মোড়ের এনা পরিবহনের বুকিং সহকারী শফিকুল ইসলাম বলেন, খুলনা থেকে কোনো গাড়ি ছাড়া হচ্ছে না। এছাড়া খুলনায় কোনো গাড়ি প্রবেশও করছে না। শুধু যারা আগে টিকিট বুকিং দিয়েছিরেন, তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য কাউন্টার খুলে রেখেছি।
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, শনিবার (২২ অক্টোবর) বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ বাস ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
তবে মালিক সমিতি বলছে, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও মহাসড়কে নসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, অতুল, ইজিবাইকসহ তিন চাকার অবৈধ যানবাহন চলাচলের প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুদরতই-আমির এজাজ খান বলেন, খুলনার বিভিন্ন উপজেলা এবং বিভাগের নয়টি জেলা থেকে গণসমাবেশে নেতাকর্মীদের আসা বাধাগ্রস্ত করতেই পরিকল্পিতভাবে বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে জন্য ১০ জেলার নেতাকর্মীদের বিকল্পভাবে সমাবেশে আগেভাগে আসতে বলা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে শনিবার নগরের সোনালী ব্যাংক চত্বরের বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল হবেই। সমাবেশ স্থলসহ সমস্ত খুলনা মহানগর জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
তবে খুলনা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেনের দাবি, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচলের প্রতিবাদে মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে ধর্মঘটের সময় আরও বাড়তে পারে।
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, বাস মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের সঙ্গে শ্রমিক ইউনিয়ন একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সে কারণে আমরাও কোনো গাড়ি চালাবো না।
এদিকে খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য ও মিডিয়া সাব কমিটির আহ্বায়ক এহতেশামুল হক শাওন বলেন, বিএনপির গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র চলছে। পরিবহন বন্ধ রাখা মানে মহাসমাবেশ হবে না, এটি ভাবার অবকাশ নেই। সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রাখা মানে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ।
তিনি বলেন, অবিলম্বে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে সহায়তা করুন।
উল্লেখ্য, খুলনা মহানগরের সোনালী ব্যাংক চত্বরে শনিবার খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কর্মসূচি সমন্বয় করবেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সুত্র-বাংলানিউজ
বিএ/