খবর২৪ঘণ্টা বিনোদন,ডেস্ক: কথার কী আছে? তা তো বলাই যায়! কিন্তু তার প্রভাব থেকে যায়। থেকে যায় মানুষের মনের গহন কোণে। সারা জীবনের সঞ্চিত স্মৃতি সেখানেই লুকানো থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেরিয়ে আসার রাস্তা খুঁজে পায় না। আবার যদি সঠিক মাধ্যম পেয়ে যায়, নিজস্ব গতিতে আপন গতিপথে বইতে থাকে। এ গতিপথ নিজে থেকে ঠিক করা সম্ভব নয়। কারণ জীবন স্রোতস্বিনী। আপন মর্জির মালিক। ঠিক-ভুলের দ্বন্দ্বকে হারিয়ে সে নিজের মতো বয়ে যায়। জীবনের এই গতিপথকে কি মাত্র ১৬১ মিনিটের চলমান চিত্রে বন্দি করা সম্ভব? নাহ, তা সম্ভব নয়। পরিচালক রাজকুমার হিরানি সে চেষ্টাও করেননি। কেবল কিছু অংশ তুলে ধরেছেন মাত্র। আর তাতেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রেক্ষাগৃহে তুমুল শোরগোল। দর্শকের চিৎকারে কান পাতা দায়।
কী আছে মানুষটার মধ্যে? নাম। কেবলই একটা নাম, সঞ্জয় দত্ত। ভুলে ভরা জীবন। অথচ সত্যি। আপাদমস্তক একটা রূঢ় ‘বাস্তব’। এই বাস্তবকেই রুপোলি ক্যানভাসে সুন্দরভাবে আঁকলেন পরিচালক। যাতে নিখুঁত রঙের কাজ করলেন রণবীর ‘সঞ্জু’ কাপুর। প্রযোজক বিধুবিনোদ চোপড়ার প্রথম পছন্দ ছিলেন রণবীর সিং। কিন্তু পরিচালকের জেদের কাছে হার মেনেছিলেন তিনি। ধন্য পরিচালকের চোখ। একটু ওয়াইড অ্যাঙ্গেলে ক্যামেরা ধরলেই সঞ্জয় দত্ত ও রণবীর কাপুরের মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভবই নয় প্রায়। সত্যিই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন রণবীর। নিজের অভিনয় দক্ষতায় রকি থেকে মুন্নাভাইয়ের যাত্রাপথকে সুমধুর করে তুলেছেন। এবার বেশিরভাগ অ্যাওয়ার্ড ফাংশনে তাঁকেই ট্রফি হাতে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
বিধুবিনোদ চোপড়া ও রাজকুমার হিরানি। এই জুটির ছত্রছায়ায় আসা মানেই অভিনেতার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসা। তাই-ই হয়েছে এ ছবির ক্ষেত্রে। ইতিহাস যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে বর্তমানের পর্দায়। সুনীল দত্ত হিসেবে পরেশ রাওয়াল, নার্গিস হিসেবে মণীশা কৈরালা চেনালেন জাত অভিনেতা কাকে বলে। বিশেষ করে মণীশার কথা না বললেই নয়। সত্যিই বলিউড অন্যভাবে ব্যবহার করতে পারত এই অভিনেত্রীকে। সোনম কাপুর, অনুষ্কা শর্মা, দিয়া মির্জা, ভিকি কৌশল, জিম সর্ভ- প্রত্যেকে সমৃদ্ধ করেছেন এ কাহিনিকে। তবে চমক রয়েছে ছবির শেষে। কী? সিনেমা শেষ হওয়ার পরও একটু প্রেক্ষাগৃহে বসে থাকতে হবে তার জন্য। আমি না হয় নাই বা বললাম!
কিন্তু কাহিনি থেকে অনেক কিছুই যে বাদ চলে গিয়েছে। গানের ব্যবহারও একটু মাত্রা ছাড়িয়েছে। কেবল একটা দৃষ্টিভঙ্গীই বারবার পরিস্ফুট হয়েছে। সঞ্জয় দত্ত নামটি বলিউডের খলনায়ক হতে পারে, কিন্তু ‘টেরোরিস্ট’ নয়। হ্যাঁ, জীবনে যদি কারও সাড়ে তিনশোর উপরে শয্যাসঙ্গী হয় তাহলে অনেক গল্পই বলা সম্ভব নয়। এর মধ্যে আবার এমন অনেকের জীবন জড়িয়ে রয়েছে, যাঁরা এখন আবার নিশ্চিন্তে সংসারও করছেন। সে পর্বও অতি সন্তর্পণে পরিচালককে এড়িয়ে যেতে হয়েছে। তা কিছু জায়গায় চোখেও লেগেছে। আবার মনে প্রশ্নও জাগিয়েছে? কিন্তু আবেগের কাছে কখনও কখনও যুক্তি হার মানতে বাধ্য হয়। সেই হারই যেন বারবার ‘সঞ্জু’ দেখতে গিয়ে হয়েছে। একটা অপূর্ণতা পূর্ণতা পেয়েছে। তাই তা সঞ্জু হতে পেরেছে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ