টাঙ্গাইলে একটি নৈশ কোচে যাত্রীবেশে ডাকাতি ও এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
বুধবার (৩ আগস্ট) রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় এই মামলা হয় বলে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন।
মেয়েটিকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মধুপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন মামলার বরাত দিয়ে জানান, যাত্রীবেশে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নাইট কোচে উঠে ডাকাত দল গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের মারধর ও তাদের সাথে থাকা জিনিসপত্র লুট করে। পরে বাসে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে।
বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদের উল্টোপাশে মজিবরের বাড়ির সামনের বালির ডিবিতে বাস উঠিয়ে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।”
অন্তজেলা ডাকাত দলের ওই সদস্যরা টানা তিন ঘণ্টা বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এমন ঘটনা ঘটায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। কুষ্টিয়ার থেকে ঈগল পরিবহনের এই বাস ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে মঙ্গলবার ছেড়ে আসে। পথে এ ঘটনা ঘটে।
নাটোরের বড়াইগ্রামের বাসিন্দা ফল ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানান, তিনি বাসের নিয়মিত যাত্রী। বাসের সুপার ভাইজার রাব্বি ও হেলপার দুলাল তার পূর্বপরিচিত। কিন্তু বাসের এবারের চালক নতুন। তিনি বড়াইগ্রামের তরমুজ চত্বর থেকে আমড়া, কাঁঠাল ও তালসহ বিভিন্ন ফল ঢাকার গুলশানে নিয়ে যেতে বাসে উঠেন।
“বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি দিবারাত্রি হোটেলে নৈশভোজের জন্য যাত্রা বিরতি দেয়। পরে রাত দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু করে। পথে কাঁধে ব্যাগ বহনকরা ১০-১২ জন তরুণ যাত্রী ওঠেন।”
ওই যাত্রী বলেন, তখন সবাই প্রায় ঘুমে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশে থাকা ওই তরুণ দল অস্ত্রের মুখে একে একে ঘুমন্ত যাত্রীদের সবাইকে বেঁধে ফেলে। প্রত্যেক যাত্রীর চোখ ও মুখ বেঁধে চালককেও জিম্মি করে বাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
পাঁচ মিনিটের মধ্যে সব যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল, টাকা, গহনা নেয়। তারপর এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে বাস বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে তিন ঘণ্টার মতো নিয়ন্ত্রণে রাখে। শেষে পথ পরিবর্তন করে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালির ডিবিতে ঠেকিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়।
সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের উদ্ধার করে বলে তিনি জানান।
পুলিশ জানায়, সকালে সংবাদ পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে করে থানায় নিয়ে আসে। প্রথমে এটিকে দুর্ঘটনা মনে করা হয়েছিল। পরে বিষয়টি পরিষ্কার হয়।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, “এ ব্যাপারে বাসের যাত্রী হেকমত আলীকে বাদী করে ডাকাতি ও গণধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। মেয়েটিকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বিএ/