1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
বাসের হেলপার-চালকের পরিকল্পনায় কনস্টেবল শরীফ হত্যা - খবর ২৪ ঘণ্টা
শুকরবার, ১০ জানয়ারী ২০২৫, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

বাসের হেলপার-চালকের পরিকল্পনায় কনস্টেবল শরীফ হত্যা

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৫ মারচ, ২০২০

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত থাকার সুবাদে তাকওয়া বাসের হেলপার মোফাজ্জল হোসেন (২৮) ও চালক মনিরের সঙ্গে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক ছিল কনস্টেবল শরীফের (৩৩)। অজ্ঞাত কারণে সুসম্পর্ক রূপ নেয় দ্বন্দ্বে। একপর্যায়ে কনস্টেবল শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে মোফাজ্জল হােসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১ মার্চ কনস্টেবল শরীফকে খুন করার জন্য মোফাজ্জল ১০ হাজার টাকায় ময়মনসিংহের ভাড়াটে খুনি মাসুদকে ভাড়া করে।

২ মার্চ চুক্তি অনুযায়ী মাসুদ গাজীপুরে আসে ও মনিরের বাসায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়। ৩ মার্চ দুপুরে তাকওয়া বাসের চালক মনির একটি চাকু কিনে মাসুদকে দেয়। ৩ মার্চ রাত সাড়ে ১১টায় মোফাজ্জল কৌশলে কনস্টেবল শরীফকে ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে তাকওয়া পরিবহনে ওঠায়। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে চলন্ত বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে লোহার হুইল রেঞ্জ দিয়ে পেছন থেকে শরীফের মাথায় আঘাত করে। অজ্ঞান হয়ে পড়লে মোফাজ্জল ও মাসুদ নাইলনের রশি দ্বারা দুই হাত বাঁধে এবং চাকু দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। এরপর মোবাইল টাকা রেখে দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যায়।

গত ৪ মার্চ সকালে গাজীপুর মহানগরীর ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৪ নম্বর গেটের সামনে থেকে অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে নিহত যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ায়, পুলিশের সকল আইনি কার্যক্রম শেষে গত ৮ মার্চ বেওয়ারিশ হিসেবে পূর্ব চান্দনা কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডটি র‍্যাব-১ তাৎক্ষণিকভাবে ছায়া তদন্ত শুরু করে। গত ১২ মার্চ পিবিআই কর্তৃক লাশের ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করে জানা যায়, তার নাম মো. শরীফ আহমেদ (৩৩)। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ঝিলকি এলাকার আলাউদ্দিন ফকিরের ছেলে। শরীফ আহমেদ গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগে প্রায় ছয় মাস ধরে কনস্টেবল পদে কর্মরত।

নিহতের বাবা আলাউদ্দিন হোসেনও একজন পুলিশ সদস্য। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা শহর ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ১২ মার্চ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৪ মার্চ) র‍্যাব-১ এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা গাজীপুর মহানগরীর শ্রীপুর থানাধীন গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকা থেকে মোফাজ্জল হোসেনকে (২৮) ও তার দেয়া তথ্যমতে ময়মনসিংহের তারাকান্দায় অভিযান পরিচালনা করে মাসুদ মিয়া (২৫) ও মনির হোসেনকে (৩০) গ্রেফতার করে।

তাদের দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত তাকওয়া পরিবহনের একটি বাস (যার রেজি. নম্বর গাজীপুর-জ-১১-০১৭৫), রক্তমাখা গাড়ির হুইল রেঞ্জ, একটি চাকু এবং ভিকটিমের তিনটি মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়।

রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় কারওয়ান বাজার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফি উল্লাহ বুলবুল। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, নিহত শরীফ আহমেদ একজন পুলিশ কনস্টেবল। তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। কনস্টেবল শরীফের সঙ্গে মোফাজ্জল ও গাজীপুরের তাকওয়া বাসের চালক মনিরের পূর্বপরিচয় ছিল। কিছুদিন পূর্বে কনস্টেবল শরীফের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে মোফাজ্জল এবং মনির দুজনে শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে। যার মাস্টারমাইন্ড মোফাজ্জল হোসেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৩ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোফাজ্জল কৌশলে কনস্টেবল শরীফকে ভোগড়া বাইপাস এলাকায় নিয়ে আসে ও তাকওয়া পরিবহনে ওঠায়। ড্রাইভার মনির হোসেন বাসটিকে চালিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে শ্রীপুরের মাওনার উদ্দেশে রওনা হয় এবং জয়দেবপুরের ভবানীপুর বাজার থেকে ইউটার্ন নিয়ে পুনরায় চান্দনা চৌরাস্তার দিকে যায়। পথে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তারা বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে ভাড়াটে খুনি মাসুদ লোহার হুইল রেঞ্জ দ্বারা পেছন থেকে শরীফের মাথায় পরপর আঘাত করে। ফলে শরীফের মাথা ফেটে রক্ত পড়তে থাকলে সে অজ্ঞান হয়ে গাড়ির মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। মোফাজ্জল ও মাসুদ দুজন মিলে নাইলনের রশি দ্বারা প্রথমে শরীফের দুই হাত বেঁধে গাড়ির পেছনের দিকে নিয়ে যায় এবং মোফাজ্জল শরীফের বুকের ওপর বসে এবং ভাড়াটে খুনি মাসুদ ধারালো চাকু দ্বারা গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। রাত ২টার সময় বাসটি ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের ন্যাশনাল পার্কের ৪ নম্বর গেটের সামনে পৌঁছালে ড্রাইভার মনিরসহ তিনজনে মিলে লাশটি রাস্তার পাশে ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। তারপর তারা তিনজন বাসন এলাকায় মাম সিএনজি পাম্পে পানি দিয়ে গাড়ির রক্ত ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে। তাদের রক্ত মাখা জামা-কাপড় পলিথিন ব্যাগে করে গাড়ির টুলবক্সের ভেতর রেখে দেয়।

র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফি উল্লাহ বুলবুল বলেন, মনির তার নাওজোর ভাড়াবাসা থেকে মোফাজ্জল ও মাসুদের জন্য পরিষ্কার লুঙ্গি-গেঞ্জি নিয়ে আসে এবং তারা তিনজন গোসল করে রাতের খাবার খেয়ে একত্রে মনিরের বাসায় রাত্রিযাপন করে। ৪ মার্চ সকালে ড্রাইভার মনিরসহ তিনজন গাড়িটি নিয়ে কোনাবাড়ি সার্ভিসিংয়ে যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়। তাদের রক্তমাখা জামা-কাপড়গুলো গাড়ির টুলবক্স থেকে বের করে কড্ডা ব্রিজের নিচে গভীর পানিতে ফেলে দেয়। পরে মাসুদ তার বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দায় চলে যায়। মোফাজ্জল ও মনির তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে যোগদান করে।

মাসুদ একজন থ্রি হুইলার ড্রাইভার, সে শম্ভুগঞ্জ-ময়মনসিংহ রোডে মাহেন্দ্র গাড়ি চালায়। গ্রেফতারের পর তারা তিনজনই হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

খবর২৪ঘন্টা/নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST