আজহারুল ইসলাম বুলবুল : ছেলে মালেশিয়া প্রবাসে থাকে ৮ বছর ধরে। বিয়েও করছেন সেখানে কম্বোডিয়ান এক তরুনীকে। তাই বাবা মার ইচ্ছে ছিল ছেলে প্রবাস থেকে বউ নিয়ে হেলিকপ্টার চড়ে আসবে নিজ গ্রামে। তখন সাত গ্রামের মানুষ আমার ছেলে ও বউকে দেখবে হাসিমাখা মুখে কথা গুলো বলছিলেন মা রাফি বেগম। সত্যি তাই মা-বাবার সেই ইচ্ছা পূরুণ করলেন সেই ছেলে রাকিবুল ইসলাম রকেট।
সোমবার ৫ মে ২০২৫ সকাল ১০ টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের পালশা গ্রামে হেলিকপ্টার যোগে বউ, বাচ্চা, শ্বাশুড়ী, ছোট শ্যালকসহ নিজ গ্রামে আসেন রকেট। এসময় প্রবাসী বউ ও হেলিকপ্টার দেখতে হাজার উৎসুক জনতার ভিড় বাধে স্কুল মাঠে। রাকিবুল ইসলাম রকেট পালশা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ প্রামানিকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার ঢাকা বিমান বন্দর থেকে হেলিকপ্টার যোগে উপজলোর পালশা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে রকেটসহ কয়েকজন। তখন এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনরা তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। এদিকে ৮ বছর পর প্রবাসী রকেট বউ- সন্তান, শাশুড়ি নিয়ে দেশে ফিরলে হেলিকপ্টার ও তাদের এক নজর দেখতে উৎসুক জনতার ভীড় করেন।
রকেটের বড় ভাই রাসেল রানা জানান, রকেট মালেশিয়া প্রবাসী। তার শশুর হিরু রহমান ১৭ বছর ধরে সেখানে তিনি চাকরি করেন। সেই সুবাদে হিরু তাঐ বিয়ে করেন মালয়েশিয়া প্রবাসী কম্বোডিয়ান নারী আয়েশা খাতুনকে। পরে হিরু-আয়েশা দম্পতির কন্যাকে ৫ বছর আগে মালেশিয়ায় বিয়ে করেন আমার ছোটভাই রকেট। হিরু তাঐ আমাদের পাশের গ্রাম যুগিশোতে বাড়ি। সেই সুবাদে ছোট রকেটের সাথে তার মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন করেন।
রকেট দম্পতির বিয়ের পর একটি সন্তানের জন্ম হয়েছে । বাবা-মার ইচ্ছে ছিল, আমার ছেলে যেন হেলিকপ্টারে করে প্রবাস থেকে বউ নিয়ে নিজ গ্রামে আসেন। মা-বাবার ইচ্ছে পূরুণ করতে এ আয়োজন। রকেটের মা রাফি বেগম বলেন, আমার ছেলে রকেট ৮ বছর প্রবাস জীবন পার করেছেন। তাই আমাদের ইচ্ছে ছিল। সে বউ-সন্তান নিয়ে হেলিকপ্টারে নিজ বাড়িতে আসুক। আমাদের ইচ্ছে আমার ছেলে পূরুন করেছে। রকেট হেলিকপ্টারে আসবে এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক হাজারও মানুষ আমার বাড়ি ও বিদ্যালয় মাঠে ভীড় জমায়। এতে গ্রামবাসীদের মধ্যে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা গেছে।
রাকিবুল ইসলাম রকেট বলেন, আমার মা-বাবার ইচ্ছে পূরুণ করতে পেরে ভাল লাগছে। দীর্ঘ ৮ বছর পর বউ, সন্তান সাথে শাশুড়ি, ছোট শ্যালককে নিয়ে নিজ গ্রামে আসতে পেরে মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার মা-বাবার ও অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল আমরা যেন হেলিকপ্টার যোগে নিজ গ্রামে আসি। এখানে নিজ গ্রামে পরিবার পরিচিত আত্মীয়স্বজন ও গ্রাম বাসীদের ভালবাসা পেয়ে আমি খুবই খুশি।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা বলেন, হেলিকপ্টার যোগে গ্রামে প্রবাসী আসবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানা পুলিশকে জানানো হয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্কুল মাঠে পুলিশ মোতায়েন ছিল।
বিএ..