বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সীমান্ত এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা গা ঢাকা দিয়েছে। সীমান্তের ৬টি গ্রামে প্রায় দেড় শতাধিক চোরাকারবারি থাকলেও আলোচনায় রয়েছে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে ২১ জনের নামের তালিকা। তাদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশের সূত্রে জানা যায়, দেশব্যাপী মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর গা ঢাকা দিয়েছে চোরাকারবারীরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে বাঘা উপজেলার সীমান্ত এলাকার আলাপুর, কিশোরপুর, মহদিপুর, পাকুড়িয়া, হেলালপুর, মীরগঞ্জ এ ছয়টি গ্রাম
থেকে প্রায় দেড় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে। এদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন অর্ধশতাধিক। তবে গডফাদার হিসেবে রয়েছে ২১ জনের নাম। যারা মূলত বিভিন্ন ধরনের লোকজন দিয়ে মাদক কেনা বেচা করে থাকে। এই গডফাদারদের তালিকায় আন্তঃ জেলা চোরাকারবারিদের গডফাদার ও মাদক সম্রাট হিসাবে পরিচিত। তাদের নামে বাঘা থানায় অস্ত্র ও হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক চোরাচালানী মামলা।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাঘা উপজেলার সীমান্ত এলাকার এ ছয়টি গ্রাম থেকে রাজশাহী, নাটোর, ঈশ্বরর্দী ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের সরাসরি ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে এ গ্রামে তৈরি হয়েছে একাধিক চোরাচালান সিন্ডিকেট। যাদের কাজ হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফেন্সিডিল, হিরোইন, মদ ও ইয়াবা ট্যাবলেট এনে যুবসমাজকে ধবংস করা। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা এগুলো বিক্রি করা করছে।
বাঘা থানার পুলিশ ছয়টি গ্রাম থেকে চোরাকারবারির তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা হলেন-সামাদ মোল্লা, কালাম মোল্লা, ইদ্রিশ
মোল্লা, সাহাবুল ইসলাম, ট্যাংরা হোসেন, আবদুল কুদ্দুস, আবুল কাশেম, তজলু হোসেন, দুলাল হোসেন, বজলু হোসেন, আফজাল হোসেন, জয়নাল মুন্সি, মোকারম হোসেন, রিপন আলী, রাকিবুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, গিয়াস উদ্দীন, হাফিজুল ইসলাম, আবদুল কুদ্দুস, দবির হোসেন, খালেক হোসেনে, জার্জিস আহম্মেদ, বাদশা হোসেন, আনিছুর রহমান, মিঠুন আলী, গাজী হোসেন, শহিদুল ইসরাম, নাজমুল হোসেন, ঝুন্টু হোসেন, পান্না হোসেন, রান্টু হোসেন, ভুলা হোসেন, আবদুল হান্নান, পিয়ারুল ইসলাম,
সাইফুল ইসলাম, সামাদ হোসেন, দুলাল হোসেন, রুবেল আলী, রিয়াল হোসেন, বারী হোসেন, তছিকুল ইসলাম, পলাশ হোসেন, মাহবুর রহমান, মফিজ উদ্দীন, ফলা হোসেন, আবদুর বারী, সইিদুর রহমান, আইনাল হকের নামে বাঘা, চারঘাট, লালপুর, ঈশ্বরর্দীসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এই গ্রামগুলো হাইওয়ে রাস্তা থেকে একটু ভেতরে হওয়ায় এখানে মাদক সেবনকারীদের অবাধ আসা যাওয়া চলে। প্রতিদিন এ অঞ্চলে মোটরসাইকেল নিয়ে আসা ফেনসিডিল সেবনকারীর সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক। এই গ্রামগুলোতে প্রকাশ্যেই ফেনসিডিল ব্যবসা চলে। এছাড়া উপজেলার আড়ানী, মনিগ্রাম, পাকুড়িয়া, বাউসা, বাঘা,
চকরাজাপুর, গড়গড়ি ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে চলছে মাদক ব্যবসা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল শিক্ষক জানান, চলতি রমজানের এক সপ্তাহ পূর্বেও প্রকাশ্যেই ফেনসিডিল ব্যবসা করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। তবে প্রথম রমজান থেকে দেশব্যাপী মাদক অভিযান ও চোরাকারবারিদের ক্রস ফায়ার শুরু হওয়ার পর তারা আত্মগোপনে রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকই ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল হাসান জানান, চোরাকারবারিদের সাথে কোন আপোশ নেই। এ থানায় নতুন যোগদানের পর চোরাকারবারিদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। চলতি রমজানে ৮টি মাদকের মামলা দেয়া হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী; গ্রেফতারের জন্য প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হচ্ছে। অতিশীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
গোলাম তোফাজ্জল কবীর মিলন
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ