বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে অতিরিক্ত হারে খাজনা (টোল) আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে অতিরিক্ত খাজনা নেয়ায় আদায়কারীদের সাথে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে বাকবিতন্ডা নিত্য নৈমিত্তি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার শিকদারী হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্থানীয় ব্যবসায়ী হামিরকুৎসা গ্রামের আজিজুর রহমান, জিয়াউর রহমানসহ কতিপয় ব্যবসায়ী অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইজারাদারের হয়রানীর বিষয় আমলে নিয়ে তাৎক্ষনিক ইজারাদারকে ডেকে বিষয়টি অবহিত ও অনিয়মের ব্যাপারে কঠোর শর্তক করে দেন। জানা গেছে, উপজেলার ভবানীগঞ্জ, মোহনগঞ্জ, মচমইল, শিকদারী, মাদারীগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি হাটে হাট ইজারাদার নিয়মতান্ত্রিক ভাবে হাটে কোন রকম খাজনা আদায়ের চার্ট বা তালিকা না টাঙ্গিয়ে ইচ্ছা মত অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন। এতে করে প্রতিনিয়ত আদায়কারীদের সাথে ক্রেতা-বিক্রেতার বাকবিতন্ডা বাঁধে। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা অভিযোগ করে বলেন, ভবানীগঞ্জ হাট গত বাংলা ১৪২৩ সনে যেখানে ৬০/৬৫ লক্ষ টাকা ইজারা মূল্য ছিল।
সেখানে ১৪২৪ সনে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে হাটের ইজারা মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় কোটি টাকা। তাদের অভিযোগ কথিপয় অসাধু ইজারাদার নিজেদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে এক বছরের ব্যবধানে হাটের ইজারা মূল্য প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে। একই ভাবে শিকদারী হাটে বিগত দিনের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ইজারা নিয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের উপর লৌহার খড়গ মাথায় তুলেছে প্রভাবশালী ইজারাদাররা। হাটে অভিযোগকারী কৃষকসহ ব্যবসায়ীরা জাানান, চাকুরীজীবিদের বেতন কাঠামু পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু কৃষি পণ্যের মূল্য বাড়েনি অথচ লাফিয়ে চলেছে কৃষি উপকরণের মূল্য। এবিষয়ে কেউ খোঁজ নেন না।
একই ভাবে অতিরিক্ত ইজারা মূল আদায় করার জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যের তোয়াক্কা না করে এবং সরকারি খাজনার চার্ট হাটের উন্মুক্ত স্থানে না টাঙ্গিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ী ও হাটে আগত বিভিন্ন ক্রেতা বিক্রেতাদের হয়রানী নির্যাতন করে অতিরিক্ত হারে খাজনা আদায় শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। হাটে আলু, বেগুন, পটল, পিয়াজ সহ বিভিন্ন তরিতরকারির বিক্রেতাকে মণ প্রতি ৪০ টাকা এবং ত্রেতাকে একই পন্যের জন্য মণপ্রতি ২০ টাকা খাজনা প্রদান করতে হয়।এমনকি তাদের দাবীকৃত খাজনা দিতে অপারগতা জানালে তাদেরকে বিভিন্ন হয়রানী নির্যাতনসহ হাট থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটাচ্ছে।
এদিকে ভবানীগঞ্জ হাটে ফুঁড়ি ধান ব্যবসায়ীদের অত্যাচার কৃষকরা অতিষ্ঠি হয়ে পড়েছে। ৩০ কেজিতে মন হিসেবে ধান ক্রয় করে সে ধান ৪২/৪৩ কেজি হারে দাবি করছে। নির্ধারিত ৪০ কেজিতে অতিরিক্ত ২ থেকে ৩ কেজি বেশ ধান নেয়ার প্রবনতা বাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম বলেন, গতকাল উপজেলার শিকদারী বাজারের জনৈক ব্যবসায়ী মৌখিক ভাবে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগে ইজারাদারকে সাবধান করে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্দেশিত তালিকা অনুযায়ী খাজনা আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রতিটি হাটে। সকল হাটে জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্দেশিত তালিকা উন্মুক্ত স্থানে টাঙ্গানো সহ তালিকার অতিরিক্ত খাজনা আদায় দন্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি মনিটিরিং(তদন্ত) করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই