বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফলতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির কারণে এলাকায় অসময়ে ভয়াবহ বিদ্যুতের লোড শেডিং চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকায় ব্যাপক হারে বিদুৎ বিপর্যয়ে দূর্ভোগে রয়েছেন এলাকাবাসী। এদিকে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জের পাশে থাকা বাসুপাড়া, গণিপুর ইউনিয়ন সহ উপজেলার সর্বত্র লোড শেডিং চলছে। বুধবার মধ্য রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না এলাকায়।এতে করে গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন হাটগাঙ্গোপাড়া বিদ্যুৎ ফিডারে সংযুক্ত করায় ওই এলাকার গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, গত প্রায় এক মাস যাবত নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ এর বাগমারা জোনাল অফিসের আওতায় দিনে রাতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গড়ে ১৮ ঘন্টা সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। রাতের বেলা এই দূর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। এলাকায় গ্রীষ্মকালে সেচ কাজে ব্যবহারে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এখন সেচ যন্ত্র বন্ধ থাকার পরও বিদ্যুতের বড় ধরনের ব্যবহার কমলেও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে গুরুত্বপূর্ন অফিস, কল-কারখানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষক ও
সর্বসাধারণকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। সামান্য বৃষ্টি বা একটু জোরে বাতাস হলেই নাটোর পল্লী বিদ্যুতের জাতীয় গ্রীড ফল্টের অজুহাতে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। আবার আকাশ সামান্য মেঘাচ্ছন্ন হতে না হতেই একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। মাঝে মাঝে লোড শেডিংয়ের মাত্রা ব্যাপক বেড়ে যায়। তখন কেন্দ্রীয় সঞ্চালন লাইনসহ অন্যান্য লাইন মেরামতের অজুহাত দেওয়া হয়। বর্তমানে সন্ধ্যার পর এক টানা বিদ্যুৎ না পেয়ে সকল স্তরের জনসাধারণ দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থানীয় জোনাল অফিসে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক দূর্নীতি, ঘুষ বানিজ্যের একাধিক অভিযোগ পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সহ বিভিন্ন দপ্তরে থাকলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না এলাকাবাসী। এতে কতিপয় অসৎ ব্যক্তিদের দ্বারা লাঞ্চিত হচ্ছেনও অফিসের প্রগতিশীল সৎ অফিসারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে ভুক্তভোগী মহল দাবি করেছেন। তাদের মতে, বাগমারা জোনাল কার্যালয়ের স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে রয়েছে, বিদ্যুৎ ইউনিটের বিপরীতে বিদ্যুতের বিল বেশি করে দেওয়া, মিটার সংযোগ ছাড়াই লাইন সংযোগ দিয়ে অবৈধ বিল আদায়, মিটার ভাড়ার নামে প্রতি মাসে মাসে টাকা আদায়, অবৈধ পার্শ¦সংযোগ দেওয়া, সেচ বিলে ব্যাপক কারসাজি করে বিল আদায়, নতুন সংযোগ ও মিটার প্রদানে দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ প্রভৃতি দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
এলাকা বাসী জানান, অভিযোগ কেন্দ্রের নির্ধারিত মোবাইল ফোন নম্বারে ফোন খোলা থাকলেও তা রিসিফ না করায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। নিয়মিত বিদ্যু অফিসের অভিযোগ কেন্দ্রের অপারেটর ফোন রিসিফ করার কথা থাকলেও তা মানা হয় না।
ভুক্তভোগীরা আরো জানান, ইতিপূর্বে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির কারণে এই অফিসের ওয়ারিং পরিদর্শকসহ একাধিক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত ও ষ্ট্যান্ড রিলিজ করা হলেও পূর্বের ষ্টাইলেই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এসব ঘটনায় এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা এক সময় এক জোটে সদর ভবানীগঞ্জ সাব স্টেশনে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে। এমন ঘটনা পুনরায় না ঘটে এমন প্রত্যাশা কামনা করে বিষয় গুলো ক্ষতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তোভুগীরা। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা জোনাল কার্যালয়ের ডেপুটি জেলারেল ম্যানেজার(ডিজিএম) রেজাউল করিম জানান, সাবস্টেশনে সমস্যায় চাহিদার কম বিদ্যুতে পাওয়ায় লোড শেডিং হচ্ছে। এছাড়া তিনি সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি থাকার কথা স্বীকার করলেও অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে