বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় পুলিশ ও দু’ গ্রামবাসীর মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের হাটমাধনগর ও বাসুদেবপাড়া গ্রামের মধ্যে জোকা বিল নিয়ে বিবাদমান সংঘর্ষে গতকাল শুক্রবার দু’ গ্রামের স্থানীয় ১২ জন ও ৩ পুলিশ আহত হয়েছেন। ঘটনা সামাল দিতে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করার দাবি করেছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ৩ গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। আহতদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নরদাশ ইউনিয়নের জোকাবিলা মাছচাষের ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন থেকে হাটমাধনগর ও বাসুদেবপাড়া গ্রামের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এঘটনায় গত ১৮ এপ্রিল ওই মাছচাষীর সমিতির ক্যাশিয়ার হাটমাধনগর গ্রামের আনিছুর রহমানকে প্রতিপক্ষ কুপিয়ে খুন করে। এর জেরে উভয় গ্রামের মধ্যে দ্ব›দ্ব চলছিল। দ্ব›দ্ব মিমাংসার পূর্বেই হাটমাধনগর গ্রামের লোকজন বাসুদেবপাড়া গ্রামের লোকজনকে বাদ দিয়ে জোরপূর্বক জোকাবিলায় মাছের পৌনা অবমুক্ত করে। আবারো মাছ ছাড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্রতর হয়। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জনিয়ার এনামুল হক স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তির আশ্বাস দেন।
সেই মোতাবেক বাসুদেবপাড়ার লোকজন চুপচাপ থেকে যান। স্থানীয় সংসদ সদস্যের কথা কর্ণপাত না করে গতকাল শুক্রবার হাটমাধনগর গ্রামের লোকজন জোকাবিলের বাসুদেবপাড়ার খালের সুইচ গেটের মুখে লোহার খাঁচা তৈরী করে বন্ধ করার চেষ্টা করে। বাসুদেবপাড়া গ্রামের লোকজন বাঁধা দিলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনারস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোঁড়তে থাকে। গ্রামবাসী পুলিশকে ঘিরে ধরলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোঁড়ে। এতে দুই গ্রামবাসী ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গ্রামবাসীর হামলায় থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ ও উপপরিদর্শক শাহীন দেওয়ানসহ ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এছাড়া সংঘর্ষে ৩ বাসুদেবপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), রিমা বেগম (২৬), পিয়ারুল ইসলাম (৩৫) গুলিবিদ্ধসহ সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য সংঘর্ষের পর পরই ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ বলেন, উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের হাটমাধনগর ও বাসুদেবপাড়া গ্রামের মধ্যে জোকা বিল নিয়ে বিবাদমান সংঘর্ষের ঘটনা জানতে পেরে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলে গ্রামবাসী তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। বেগতিক দেখে লাঠি চার্জ করতে গেলে গ্রামবাসী ইট ও লোহার বলম্ব ঁেছাড়ে আত্মরক্ষাথে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়তে বাধ্য হয়। ওই ঘটনায় পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে