বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় প্রভাবশালী প্রতিবেশিদের দেয়া বাঁশের বেড়া বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন আব্দুল হামিদ নামের এক ভ্যান চালকের পরিবার। নিজের জমিতে বাড়ি তৈরি করলেও প্রতিবেশিদের কারনে সহজেই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছেন না।
গরীব আর অসহায় হওয়ার প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে লাগারও সাহস হয়ে উঠেনি ভ্যান চালক হামিদের। প্রায় তিন মাস ধরে বাড়িতে প্রবেশের মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রভাবশালীদের দেয়া বাঁশের বেড়াটি।
বাঁশের বেড়ার কারনে একা একা পায়ে হেটেই যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বাড়িটিতে তার উপরে ভ্যান। এ যেন হামিদের কাছে এক দুর্ভিসহ যন্ত্রনার নাম। মানুষ সামাজিক জীব। মানুষ একাকী বসবাস করতে পারেনা। সমাজ বদ্ধ হয়ে একে অপরে মিলে মিশে বসবাস করে থাকে। কিন্তু এখানে ঘটেছে তার উল্টো। সামান্য স্বার্থেই এখন যেন প্রতিবিশিই প্রতিবেশির শক্র।
হামিদের বাড়ি থেকে পাকা রাস্তার ১০-১২ হাত। অথচ তার বাড়ির দরজার সামনে সহ দুই ধরে বাঁশের বেড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে প্রভাবশালীদের বলেও এর কোন সুরহা হয়নি ভ্যান চালক হামিদের। অবশেষে স্থানীয় চেয়ারম্যানের স্মরণাপন্ন হন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামে। হামিদের বাড়ির এক পাশে দাঁড়ি (পানি নামার জায়গা) এক পাশে রাস্তা আর অন্য দুই ধারে বনজঙ্গল।
মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম প্রামানিক ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সত্যতা পান। স্থানীয় লোকজনের সামনে দা হাতে নিয়ে বাঁশের বেড়াটি কেটে দেয়। পরে চেয়ারম্যান সেখান থেকে চলে গেলে পুনরায় বেড়া দিয়ে হামিদের বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা বন্ধ করে দেয় একই এলাকার ইসরাইল, এলাহীবক্স, ইয়াদ আলী সহ আরো অনেকে। তারা সবাই ভাই ভাই।
এদিকে বাড়ির মালিক ভ্যান চালক আব্দুল হামিদ বলেন আমি গরীব মানুষ। আামার বেশি জমি নেই মাথা গোজার মতো একটা জায়গা তৈরি করেছি। বাড়িটি তৈরি করার সময় থেকে এখন পর্যন্ত বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আব্দুল হামিদ দাবি করেন সবাই যদি চলাচলের রাস্তা পাই তাহলে আমি কেন পাবোনা। প্রশাসনের নিকট তিনি এর প্রকৃত বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম প্রামানিক বলেন, বাড়ি যেখানেই তৈরি করা হোক না কেন রাস্তা পাওয়া তার অধিকার। কোন মানুষ শুধু নিজের জমি দিয়ে চলাফেরা করতে পারে না। তিনি আরো বলেন হামিদের বাড়ি বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এমন ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তবে শোনা যাচ্ছে আবারও সেখানে বেড়া দেয়া হয়েছে। যদি দ্রæত তারা সেখান থেকে বাঁশের বেড়া তুলে না নেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।