বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় এখনো বেশ কিছু মাটির কাঁচা রাস্তা রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই জনদুভোর্গের সীমা থাকে না এ সকল রাস্তায়। জীবনভর কাঁদা মাটির সাথে যেন বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন ওই এলাকার জনগন সহ রাস্তাদিয়ে চলাচলকারী লোকজনেরা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলেও দ্রæত সুফল পাওয়া যায় না। কেবল প্রতিশ্রæতিতেই আটকে থাকে রাস্তার উন্নয়ন।
বর্ষা মৌসুম তো পরের কথা। বছর ভর যে বৃষ্টি হয় তাতেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে রাস্তাগুলো। দীর্ঘদিন সময় পার হলেও এ সকল কাঁচা রাস্তার উন্নয়ন না হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে লোকজন। যেকোন দেশের সামগ্রীক উন্নয়ন অনেকটাই যোগাযোগ নির্ভর। যে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা যতো উন্নত সে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ততো বেশি।
গ্রামকে শহরে রুপান্তরে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। সেই সুযোগ থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে উপজেলার অনেক এলাকা। চলতি বছর এক টানা বর্ষার কারণে বিপাকে পড়েছে গনিপুর ইউনিয়নের মরাকুড়ি-একডালা ভায়া চকমহবআবতপুর কাঁচা রাস্তায় চলাচলকারী লোকজন। মাত্র ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি যেন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির বাহিরে রয়েছে আজো। বিশেষ করে মচমইল হাট সপ্তাহে ৪দিন হওয়ার কারনে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে হাজারো মানুষ।
ঝড়-বৃষ্টি আর কাঁদা পানি যেন লোকজনের নিত্য সঙ্গী। দীর্ঘদিনে একটানা বৃষ্টিতে রাস্তাটি রুপ নিয়েছে বোরো কৃষি জমিতে। পায়ে হেঁটে চলাচল করা যেখানে দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে সেখানে আবার যানবাহন। নিতান্তই খুব বিপদে না পড়লে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তায় কেউ কোন যানবাহন বের করছেন না।
বিপদের মধ্যেও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী হাট-বাজারে বিক্রয় করতে নিয়ে যেতে পারছেন না। এলাকাসহ দেশের উন্নয়নে কাঁচা এ সকল রাস্তা দ্রæত উন্নয়ন করা জরুরী। স্কুল-কলেজ সহ অফিস আদালতে যাতায়াতকারী লোকজনের অনেকেই এই রাস্তায় যাওয়া আসার পথে পা পিছলে কাঁদা পড়ে যান। এতে কাঁদা মাখা পোশাক নিয়ে তাকে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। জরুরী মুহুর্তে না পারে পুনরায় বাড়ি যেতে না পারে কর্মস্থলে যেতে।
কয়েকদিন আগে কাঁদার এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে একটি ট্রলি কাঁদায় আঁটকে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। পরে ম্যাকার এনে সেটা ঠিক করে তারপর তাদেরকে যেতে হয়। সামান্য মটর সাইকেল নিয়ে যেতে লাগে অতিরিক্ত লোকজন। পিছন দিকে ঠেঁলা দিয়ে কাঁদা পার করতে হয় তাদেরকে। বড় গাড়ি কথা বাদই দিলাম।
কবে রক্ষা পাওয়া যাবে এই অবস্থা থেকে সেটাও কেউ বলতে পারে না। তিন কিলোমিটার মরাকুড়ি-চকমহব্বতপুর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটির দ্রæত উন্নয়ন বা পাকাকরণ করা হলে নতুন ভাবে জীবন পরিচালিত করতে পারবে প্রতিদিন চলাচলকারী লোকজন। এই রাস্তাটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়া প্রধান কারণ হচ্ছে রাস্তাটি দিয়ে একডালা হাট, মচমইল হাট সহ মোহনগঞ্জ হাটে যাতায়াত করে হাজারো লোকজন।
এলাকাবাসীর দাবী মাটির রাস্তা বলে কেউ সংস্কারও করেন না। কবে যে রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছে সেই থেকে এভাবেই চলছে। কাঁদা মাটি সাথে নিয়ে আমরা যাতায়াত করছি। এমনটি বলছিলেন মাধাইমুড়ি গ্রামের ইনছান আলী, শ্যামল কুমার, বুলবুল আহম্মেদ, চকমহব্বতপুর গ্রামের মাস্টার ইনছান আলী, এনামুল হক সহ অনেকে। তবে সংকট মুহুর্তে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করার জন্য যদি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন প্রশাসন তাহলেও কাঁদার কবল থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে পারে লোকজন।
এ ব্যাপারে গনিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জু সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এই রাস্তাটির বিষয়ে অনেক বার উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় কথা উত্থাপন করেছি। কি কারনে এই রাস্তাটির কাজ করা হচ্ছেনা সেটা আমার বোধগম্য নয়।
অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানিয়েছেন, আমরা শুনেছি মরাকুড়ি-চকমহব্বতপুর মাটির রাস্তায় বৃষ্টির কারনে অনেক কাঁদার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থে দ্রæত প্রাথমিক ভাবে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাস্তাটির বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার বলেন, মরাকুড়ি-চকমহব্বতপুর জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দ্রæত পাকাকরণ করা হবে। রাস্তা পাকাকরণ করতে গেলে অনেক বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়। সম্প্রতি রাস্তাটির তাতিপুুর নামক স্থানে প্রায় ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এই রাস্তাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে বলেও জানান উপজেলা চেয়ারম্যান।
জেএন