জমির শ্রেনী পরিবর্তন করা যাবে না-সরকারের এমন প্রজ্ঞাপন জারির পরেও রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা,গোয়ালকান্দি ও গনিপুর ইউনিয়নে কৃষি জমিতে চলমান অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে না স্থানীয় প্রশাসন।
সরকারের এমন নির্দেশনা অমান্য করেই রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ভুমি প্রশাসন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে দিনের পরিবর্তে রাতের আঁধারে হামিরকুৎসা ইউনিয়নের রুয়ের বিলে ৩৫ বিঘা, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের কনোপাড়া খামারুপাড়ায় ২০ বিঘা, কনোপাড়া সফসার দিঘির মধ্যে ১৫ বিঘা, ও গনিপুর ইউনিয়নের আমতলী বিলে (মাদারীগঞ্জে) ১৬ বিঘা কৃষি জমি ধ্বংস করে অবৈধভাবে পুকুর খনন কাজ চালাচ্ছে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
উক্ত খনন কাজ বন্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোনো লাভ হচ্ছে না অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, খননকারীর ভুমি প্রশাসনের ঝামেলা এড়াতেই দিনের পরিবর্তে সন্ধ্যা পর থেকে তারা নিরাপদ হিসেবে কাজ শুরু করছে। আর তা সন্ধ্যার পর থেকে সারা রাত সহজেই খনন কাজ চালিয়ে যেতে পারছে। কারন একটাই খননকারীরা নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়েছে পুলিশের সহযোগিতা। রাতে শুধু পুলিশ ম্যানেজ থাকলেই আর কোন ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না পুকুর সিন্ডিকেটদের । ভুক্তভোগীরা যদি রাতে খনন বন্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন তাতে কোন লাভ হয়না, কারন পুলিশ সরাসরি নাকোচ করে দেন এবং বলেন ইউএনও সাহেব কে জানান এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না বলে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যান।
আরো জানাযায়, খননকারীর স্থানীয় ভুমি প্রশাসনের নিকট না গিয়ে সরাসরি থানা পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ ও সন্তুষ্ট করে তারা রাতারাতি নির্বিঘ্নে ধ্বংস করে চলেছে শতশত বিঘা কৃষি জমি।
থানা পুলিশ কে সন্তুষ্ট করতে না পারলে কোন ভাবেই রাতে ভেকু মেশিন চলে না, পুলিশের সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে রাতে পুকুর খনন। এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষি নির্ভরশীল। কৃষকরা তাদের ফসলের জমিতে প্রচুর ধান, পাট, ভুট্টা, পিয়াজ, পেঁপে,গম শরিষা, আলু ইত্যাদি ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাদের উৎপাদিত এই সকল ফসল। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অর্থনীতিতে উন্নয়ন সমৃদ্ধ ঘটাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। তা সত্ত্বেও খননকারীরা ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই কৃষি জমি ধ্বংস করে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ভেকু মেশিন দিয়ে মাটিগুলো ট্রাক্টর দিয়ে তুলে নিয়ে বিভিন্ন ইট ভাটায় চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন আবাদি জমি ধ্বংস হচ্ছে অন্য দিকে খননকৃত মাটি বিভিন্ন ভাটায় বহনের ফলে সরকারী বিভিন্ন পাকা রাস্তা ঘাটের ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে।
বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার এবং সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিনিয়ত কৃষি জমি রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও বাগমারা উপজেলায় তা মানা হচ্ছে না! বর্তমানে ভুমি প্রশাসন, সরকারের উক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা পালনে তৎপর না থাকায় নিয়মিত এই উপজেলায় পুকুর খননে ধ্বংস হচ্ছে ব্যাপক আবাদি কৃষি জমি।
প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে ভুক্তভোগী কৃষকদের দাবি-বাগমারা উপজেলায় কৃষি জমিতে চলমান সকল অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা।
বিএ/
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।