নিজস্ব প্রতিবেদক : বাকিতে কেনা মোবাইলের বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে মোবাইল বিক্রেতা জহুরুল ইসলামকে (২৩) বাগানে ডেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তার কাছে থাকা ২৫ হাজার টাকা ও বিভিন্ন কোম্পানীর ২৮টি মোবাইল সেট ছিনতাই করে নেয়া হয়। নিহত জহুরুল ইসলাম বাঘা থানাধীন পানিকুমড়া বাজারে মেহেদী হাসান ওরফে মনি এর টেলিকম ও ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানে সেলস্ম্যান হিসেবে চাকরি করতো। মূলত বাকিতে মোবাইল কিনে সেই টাকা পরিশোধ না করার জন্যই তাকে হত্যা করা হয়। হত্যার দায় স্বীকার করে আটক তিন আসামি ১৬৪ ধারায় রাজশাহীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। নিহত যুবক
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রামের রফিকুলের ছেলে। শুক্রবার দিবাগত রাতে পুলিশ মোবাইল বিক্রেতাকে হত্যা করেস ছিনিয়ে ২৮ টি মোবাইল সেট উদ্ধার করে ও তিন আসামিকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন, নাটোর জেলার লালপুর থানার কাজিপাড়া গ্রামের মৃত সানাউল্লাহর ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে শাওন (৩০), একই থানার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের আকমল হোসেনের ছেলে মাসুদ রানা (২৬) ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার জোতকাদিরপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে মেহেদি হাসান ওরফে রকি (২৩)।
এ তথ্য নিশ্চিত করে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম জানান, খুন হওয়া জহুরুল প্রতিদিন সকাল ৯টার দিকে দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল ফোন নিয়ে বিভিন্ন বাজারে মোটর সাইকেল যোগে দোকানে দোকানে গিয়ে বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে ফিরে আসতো। চলতি মাসে ৫ জানুয়ারী জহুরুল মোবাইল বিক্রি করতে গিয়ে আর ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন মোবাইলে ভিকটিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে। পরদিন সকাল ৭টার দিকে জোহরুলের
মৃতদেহ বাঘা থানাধীন তেথুলিয়া শিকদারপাড়া (কামারপাড়া) গ্রামস্থ আম বাগানের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়। পরে নিহতের ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বাঘা থানায় মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার রাতে আসামী মাসুদ রানা ও আমিনুল ইসলামকে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। এরপর তাদের দেয়া তথ্যমতে আসামি মেহেদী হাসান ওরফে রকিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার বাড়ি থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ২৮ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, নিহত জহুরুলের কাছ
থেকে মাসুদ ও আমিনুল বাকিতে মোবাইল কিনেন। বাকি টাকার জন্য জহুরুল তাদের চাপ দিলে তারা টাকা না দেওয়ার জন্য জহুরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন জহুরুল আড়ানী থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে আসামি মাসুদ ও আমিনুল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মোবাইলের টাকা দিতে চেয়ে কৌশলে তাকে আম বাগানে ডেকে নেয়। জহুরুল ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তার নিকটে থাকা ২৫ হাজার টাকা ও বিভিন্ন কোম্পানির ২৮ টি মোবাইল নিয়ে যায়। এরপর আসামিরা মোবাইলগুলো মেহেদী হাসান ওরফে রকির কাছে রাখে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রী কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এস/আর