খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: করোনারভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক চার শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশ ধারাবাহিক ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে বলে প্রশংসা করে সংস্থাটি বলছে, রাজস্ব আদায়ে স্বল্পতা এখনো বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার এডিবির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০২০ নামে সংস্থাটির শীর্ষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়।
সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে জিডিপি অনুপাতের কম রাজস্ব আদায় উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে এবং দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নে সরকারি ব্যয়কে সহায়তার জন্য করের পরিমাণ বাড়ানো এবং সংস্থানগুলোকে আরও কার্যকর করতে হবে। ব্যাপকভাবে কর সংস্কারের মাধ্যমে রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো দরকার।
করোনাভাইরাসের ফলে বাংলাদেশে লকডাউন চলছে। এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রবৃদ্ধি কমছে। তারপরও দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী বলে মন্তব্য করে এডিবি বলেছে, করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারলে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি জোরালোই থাকবে। কমলেও সেটা শূন্য দশমিক চার শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
দেশে গত অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। সরকার চলতি অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল। এডিবি পূর্বাভাস দিয়েছিল বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আট শতাংশ হবে। কিন্তু করোনার প্রভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে যাবে বলে জানায় সংস্থাটি। বলে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। তবে বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আস্থার উন্নয়ন হলে ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি কিছুটা এগিয়ে ৮ শতাংশে উঠতে পারে বলে আশা করছে এডিবি।
২০২০ সালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিয়ন্ত্রিত গ্রাহক এবং বিনিয়োগের আস্থা, রপ্তানি ও আমদানি এবং আর্থিক সংস্থান পুনরুদ্ধার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক সম্প্রসারণ নীতি এবং অনুকূল আবহাওয়ার কয়েকটি অনুমানের ওপরে ভর করেই ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্ভাবাস দেয় এডিপি।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো পারফরম্যান্স অব্যাহত রেখেছে। তবে কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে নিম্নমুখী ঝুঁকি রয়েছে। এডিবির প্রাথমিক অনুমানে ইঙ্গিত দেয়, এ মহামারির প্রভাবে বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় শূন্য দশমিক দুই থেকে শূন্য দশমিক চার শতাংশ কমতে পারে। বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে এর প্রভাব আরও নেতিবাচক হতে পারে। কোভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবিলা করতে এডিবি বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করে প্রকাশ বলেন, ‘২০২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদার সঙ্গে শক্তিশালী পারফরম্যান্স দেখিয়েছিল। এ সময় শ্রমিকদের রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। সরকারি উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তরল প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং নির্মাণ সামগ্রীর উচ্চ আমদানি; অনুকূল বিদ্যুৎ উত্পাদন, এবং রপ্তানি বাড়াতে সরকারের নীতি সহায়ক। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে রপ্তানি চাহিদায় বিঘ্ন ও রেমিট্যান্স কমার ফলে এসব বাধাগ্রস্ত হতে পারে।’
খবর২৪ঘন্টা/নই
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।