খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক: বহুল আলোচিত জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস বধু বলে পরিচিত শামীমা বেগম ইস্যুতে আবারো বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, শামীমা বেগম বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নয়। তার বৃটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে। এরপর তিনি যদি বাংলাদেশে আসেন তাহলে সন্ত্রাসের কারণে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি
দেয়া হতে পারে। আবদুল মোমেন বৃটেনের আইটিভি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব বলেছেন। আইটিভি নিউজের সিকিউরিটি এডিটর রোহিত খসরু ওই সাক্ষাতকার নেন বৃহস্পতিবার। এর আগে যখন বৃটেন শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল করে তখন বাংলাদেশ অবস্থান পরিষ্কার করেছিল। বলেছিল, শামীমা বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নয়।
তাকে ঠাঁই দেবে না বাংলাদেশ। কিন্তু তারপর দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন মন্ত্রী হিসেবে আবদুল মোমেন প্রথমবার ক্যামেরার মুখোমুখি হলেন এ ইস্যুতে।
২০১৫ সালে শামীমা সহ তিনজন স্কুলপড়ুয়া বৃটেনের বেথনাল গ্রিন থেকে পালিয়ে তুরস্ক হয়ে চলে যান সিরিয়ায়। যোগ দেন আইএসে। সেখানে বিয়ে করেন আইএস যোদ্ধাকে। শামীমার দুটি সন্তান জন্ম নেয়ার পর মারা যায়। এ বিষয়টি এ বছরের শুরু পর্যন্ত ছিল অজানা। কিন্তু এ বছর যখন তিনি তৃতীয় সন্তান প্রসবের আগে বৃটেনে ফেরত আসার আবেদন জানান, তখনই সব প্রকাশ পায়। তাকে দেখা যায় এ বছরের শুরুর দিকে সিরিয়ায় একটি
শরণার্থী শিবিরে। তার দেশে ফেরার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ। একই সঙ্গে নাগরিকত্ব বাতিল করেন ফেব্রুয়ারিতে। আইটিভি নিউজ লিখেছে, শামীমা বেগমকে বৃটিশ নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করার সরকারি কারণ কখনোই প্রকাশ করা হয় নি। তবে এটা বিশ্বাস করা হয় যে, যেহেতু তার পিতা বাংলাদেশী, তাই তিনি বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
এ নিয়েই প্রথমবার বৃহস্পতিবার ক্যামেরার মুখোমুখি হন আবদুল মোমেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন শামীমা বেগম বাংলাদেশে গেলে তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। তার ভাষায়, শামীমার বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। তিনি বাংলাদেশী নাগরিক নন। তিনি কখনো বাংলাদেশী নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করেন নি। তিনি জন্মেছেন ইংল্যান্ডে। তার মা একজন বৃটিশ। যদি কাউকে সন্ত্রাসে জড়িত দেখা যায়, তাহলে আমাদের আইন খুব সরল, তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে (ক্যাপিট্যাল পানিশমেন্ট)। এ ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। তাকে জেলে ঢোকানো হবে। আইন অনুযায়ী তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ফাঁসি দেয়া উচিত হবে।
আইটিভি নিউজ লিখেছে, কাউকে রাষ্ট্রহীন করা হলো আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। ফলে ড. আবদুল মোমেনের বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি বৃটিশ সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু এর আগে বৃটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, দেশের নিরাপত্তার জন্য কাউকে বৃটিশ পাসপোর্ট থেকে বঞ্চিত করা যেতে পারে। যদি কেউ রাষ্ট্রহীন হয়ে না পড়েন তাহলে তার বৃটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করার ক্ষমতা আছে বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
ড. আবদুল মোমেন বলেছেন, সন্ত্রাসের বিষয়ে বাংলাদেশের রয়েছে শূণ্য সহনশীলতার নীতি। সব রকম সন্ত্রাস নির্মূলে বাংলাদেশ একটি মডেল। তিনি আরো বলেছেন, সন্ত্রাসের বিস্তার রোধ করতে অন্য সব দেশকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। আবদুল মোমেন বলেন, যদি শামীমা বেগম রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েন তাহলে তিনি দুঃখবোধ করবেন। তবে এতে আমাদের করার কিছু নেই। আমরা অনেক মানুষকে দেখছি রাষ্ট্রহীন।
উল্লেখ্য, প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বর্তমানে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে ড. আবদুল মোমেন বলেছেন, যখন এসব রোহিঙ্গার ওপর নির্যাতন চলছিল, তাদেরকে হত্য করা হচ্ছিল, তখন আমরা মানবতা রক্ষার্থে আমাদের দরজাকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। তাদেরকে অস্থায়ী আশ্রয় দিয়েছি। তারা সেখানেই থাকছে। তাদেরকে এই সহযোগিতা দেয়া জন্য আমাদেরকে সমর্থন দিচ্ছে যেসব দেশ তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাই। উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির পর এসব মানুষকে ফেরত নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার এবং আমরা তাদেরকে বিশ্বাস করি। আইটিভি নিউজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন