বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ায় রুপালী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড মহাস্থানগড় শাখায় কয়েক কোটি টাকা গড়মিলের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ওই শাখায় রবিবার সকাল ১১ টায় ব্যাংক ম্যানেজার জোবায়েনুর রহমান চা খাওয়ার কথা বলে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজ থাকার ঘটনায় ওই দিন রাত ১টায় ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আব্দুল মজিদ মন্ডল বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরিতে ব্যাংক ম্যানেজার নিখোঁজ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, এঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ওই শাখা ম্যানেজারকে বরখাস্ত করার পর নতুন ম্যানেজার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছু বলা যাচ্ছে না।
ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তা এম এম জি তোফায়েল, সুলতান মাহমুদ, শাহীন মাহমুদ ও চিরঞ্জিত চক্রবর্তী।
রুপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখার অন্যান্য কর্মকর্তরা জানান, রুপালী ব্যাংক মহাস্থান শাখার ম্যানেজার বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার আগুনিয়াতাইর গ্রামের মনতেজার রহমান এর পুত্র জোবায়েনুর রহমান। তিনি রবিবার ব্যাংকে আসেন এবং সকাল সাড়ে ১১ টার সময় ব্যাংকের পাশে চা পান করার কথা বলে বের হওয়ার পর থেকে আর অফিসে ফিরেননি। তাকে অনেক খোঁজাখুজির পরেও পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তার ব্যবহৃত ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার পরিবারেও খোঁজ করা হলেও পাওয়া যায়নি।
এঘটনার পর রাত ১টায় বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ব্যাংক ম্যানেজার নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাংকে আমানত জমাকারী গ্রাহকেরা তাদের হিসাব দেখার চেষ্টা করে এবং অনেকেই অভিযোগ করেন তাদের হিসাবের গড়মিল পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠছে ব্যাংকের আমানতকারিদের কয়েক কোটি টাকা গড়মিল হয়ে থাকতে পারে।
রুপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখার নতুন নিয়োগ পাওয়া ম্যানেজার আল আমিন জানান, তিনি মঙ্গলবার সকালে এই শাখায় যোগ দিয়েছেন। ব্যাংকের গ্রাহকদের হিসাব তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটি এই কাজ করছেন।
মহাস্থান এলাকার মেসার্স মুক্তি ফল ও বীজ ভান্ডার এর প্রোপাইটার রহেদুল ইসলাম জানান, ব্যাংক হিসাবে পনেরো লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য ব্যাংকে বসে আছেন তিনি।
রুপালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, বিভিন্ন হিসাবে গড়মিল আছে কি না সেটি দেখা হচ্ছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করেছে তারা যে পরিমান আমানত রেখেছিল তা নেই। এটি কতটুকু সত্য সেটি তদন্ত করে দেখার পর বলা যাবে। রাজশাহী ডিভিশনাল অফিস থেকে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে। তিনি আরো বলেন, প্রতিটি হিসাব যাচাই করা হচ্ছে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তি জানান, রুপালী ব্যাংক বগুড়ার মহাস্থানগড় শাখার ম্যানেজার জোবায়েনুর রহমান ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টার পর থেকে নিখোঁজ থাকার ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক ও মহাস্থান মাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, মহাস্থান মাজারের একটি একাউন্ট রয়েছে রুপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখায়। মাজারের একাউন্টের জমাকৃত টাকা গড়মিল আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।