খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক: কলকাতায় শুটিং করতে এসে রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচার করে ব্ল্যাকলিস্টেড হয়েছেন বাংলাদেশি অভিনেতা ফিরদৌস। একই ঘটনা বাংলা ধারাবাহিকের অভিনেতা গাজি আবদুন নূরের ক্ষেত্রেও৷ দু’জনই এদেশে কাজ করতে এসে এমন জটিলতায় পড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি৷ ওখানকার যেসব অভিনেতা টলি ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করেন, কপালে ভাঁজ পড়েছে তাঁদের৷
হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির মাধ্যমে কলকাতায় জনপ্রিয়তা পান বাংলাদেশের অভিনেতা ফিরদৌস। আর সম্প্রতি সেই জনপ্রিয়তাকে হাতিয়া করে তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে শামিল হয়ে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, এই ঘটনার রেশ ধরে কলকাতায় হুমকির মুখে
পড়েছেন বাংলাদেশের একাধিক তারকা। বিশেষত যাঁরা এপার বাংলায় অভিনয়ের কাজ করেছেন বা করছেন৷ এই পরিস্থিতিতে কলকাতায় শুটিংয়ের কাজে থাকা বাংলাদেশি শিল্পীরা কী ভাবছেন, তাঁরা যাবতীয় আইন মেনে চলছেন কিনা, এসব নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। ‘রানি রাসমণি’ ধারাবাহিকে রাজচন্দ্রের ভূমিকায় অভিনয় করেন গাজি আবদুন নূর। তিনিও
বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু কলকাতায় রয়েছেন ২০১১ সাল থেকে। তিনি সম্প্রতি দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের প্রচারে গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রর আহ্বানে৷ না জেনেই গিয়েছিলেন বলে দাবি নূরের৷ পরে অবশ্য এনিয়ে জটিলতা তৈরি হলে নূর বলেন, ‘আমি ভুল স্বীকার করছি। বাংলাদেশ হাইকমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছি। তাদের তরফ থেকে পরবর্তী নির্দেশের জন্য আমি অপেক্ষা করছি।’
অন্যদিকে, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে ফিরদৌস ‘দত্তা’ ছবির শুটিং করছেন এই মুহূর্তে৷ ছবির বাকি অংশের শুটিং লোকসভা নির্বাচনের পরেই হওয়ার কথা। ছবির পরিচালক নির্মল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত শুটিং হচ্ছে না। তারপর যদি ফিরদৌস ভিসা না পেলে কী হবে, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।’ এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বিশেষ প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি৷ তবে তিনি এও জানান যে ফিরদৌস তাঁর খুব ভাল বন্ধু। এপার-ওপার, দুই বাংলায় ফিরদৌস খুব পরিচিত নাম। তাঁর কোনও ক্ষতি চান না ঋতুপর্ণা৷
টলিউডে বাংলাদেশের একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রীকে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। যেমন রয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। ফিরদৌস, নূরের ঘটনার পর জয়া বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের বাঙালি। ভারতের বাঙালি সংস্কৃতির ওপর আমার শ্রদ্ধা অসীম। শিল্পী হিসেবে নিজের গণ্ডি বাড়াতে চেয়েছি চিরকাল। সে কারণেই ভারতের প্রযোজক-পরিচালকের তরফে যখন কাজের সুযোগ পাই, নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। দুই বাংলার শিল্পীরা একসঙ্গে কাজ
করার কারণে দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্য বিনিময় হয়। যেটা খুব ভাল দিক। কিন্তু ভারতে একজন বিদেশি নাগরিক হিসেবে কখনই আমি রাজনীতি বা রাজনৈতিক প্রচারপর্বে অংশগ্রহণ করতে পারি না।’ আগামী দু’মাস বাংলাদেশে মহিলা ফুটবল টুর্নামেন্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর জয়া। তাই লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে ভারতে থাকার পরিকল্পনা করেছেন৷ মে মাসে মুক্তি পাবে জয়া আহসান অভিনীত ছবি ‘কণ্ঠ’।
অন্যদিকে, টলিউডের বাণিজ্যিক ছবিতে ইদানিং বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন শাকিব খান, নুসরত ফারিয়া, বিদ্যা সিনহা মিমি-সহ বেশ কয়েকজন৷ এদেশে কাজের যাবতীয় প্রশাসনিক অনুমতি নিয়েও শুটিং করছেন তাঁরা৷ নুসরত টলিউডের এক নামী প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন৷ এবার ‘বিবাহ অভিযান’ নামে এক ছবির নায়িকা তিনি৷ এছাড়া গায়ক অর্ণবের জন্য একটি মিউজিক ভিডিওয় কাজ করছেন আরেক বাংলাদেশি মডেল মিথিলা৷ কিন্তু ফিরদৌস বা নূরের ঘটনায় তাঁরা আরও সাবধানী হয়ে উঠছেন বলে সূত্রের খবর৷
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন