সনাতন ধর্মাবলম্বীদর পূজামন্ডপ-ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগিসংযোগ প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষের আয়াজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়র প্যারিস রোড ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নাই’ স্লোগানে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে বিশ্বব্যিালয়র শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি যায়গা যেখান থেকে আমরা সম্প্রীতির বাণী ছড়িয়ে দিতে পারি। ধর্মের রাজনীতি ও ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির মধ্যে ব্যাপক ফারাক আছে। রাজনীতির ধর্ম, রাষ্ট্রর ধর্ম এবং মানবিকতার ধর্ম আজ ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির কাছে বিপন্ন। এটা কেন হলো যেটার সমাধান আমরা ১৯৭১ এই করে ফেলেছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটা স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশে চার মূলনীতির ওপর দাড় করিয়ে যেখানে একটি ছিল অসাম্প্রদায়িকতা। আড়াইশ বছর পূর্ব সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনাশের যে আগুন দেওয়া হয়েছিল তা আজ লেলিহান শিখায় পরিণত হয়েছে। পুড়ছে ঘরবাড়ি, পুড়ছে জনপেদ, পুড়ছে মানুষ। পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে আত্ম মানবিক সম্পর্ক। আমরা আবহমান বাংলায় সহস্র বছর ধর সম্প্রীতির নিগূঢ় বন্ধন। যখন আমরা বড় হয়েছি অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে।’
নাট্যজন ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, ‘দেশে অন্যায়, অবিচার হলে সাধারণভাবে দেখা যায় যে, রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বা পেশাজীবী সংগঠন মাঠে নামে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বা প্রতিষ্ঠানের কাছ দাবি জানায়। তবে আমাদর আজকের এই কাজের একটি বড় ব্যতিক্রম হলো স্বয়ং প্রতিষ্ঠান এই অন্যায়-অবিচারর বিরুদ্ধে আজ মাঠে নামছে। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানে বলতে চায় এই ইস্যুত কোন পক্ষ বিপক্ষে নেই, যেটা আমাদর দীর্ঘদিনের স্বপ।
তিনি বলেন, আমরা শুনেছি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এবং সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন করার কথা সরকারের রয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল তখনই আসবে যদি তদন্তটি সময়মত হয়। ২০১৬ সালে নাসিরনগরে যে ঘটনা ঘটল সেটি এখনো সাধারণ বিচারালয়ই আসেনি, তাহলে বিচার হবে কী করে? কারণ তদন্তই হয়নি। তাই দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালর সঙ্গে এমন একটি আইন করা হোক যে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় সর্বচ্চো তিন মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবদন দিতে হবে। এরকম একটি আইন না করলে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল করে লাভ নেই।’
তিনি আরও বলেন, আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে এই ধরনের ঘটনার একটি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক দিকে থাকে। এর সঙ্গে নানা মহলের স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই এটি যেন কবলে কুমিল্লা বা রংপুরর ঘটনা হয় না দাঁড়ায়। সরকারর একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা প্রয়োজন, যেন আমাদর মাঝেমধ্যেই এভাব দাঁড়াতে না হয়, সমাজের মনোজগত যে সাম্প্রদায়িকতা বাসা বাঁধছে সেটি দূর করার জন্য। এর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃণা ছড়ালে উন্নত দেশের মতো যেন দ্রুত তা বন্ধ করা যায় সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
মানববন্ধনে অন্যদর মধ্য সহ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মা. সাইয়দুজ্জামান, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের পক্ষে অধ্যাপক আসাবুল হক, আইন বিভাগর সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান, অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাব্বেল হাসান, সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি সাবির হাসান, সাধারণ কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ, পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সলিম বক্তব্য দন। বিশ্ববিদ্যালয়র মার্কেটিং বিভাগ, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, অফিসার সমিতি ব্যানারে নিয়ে কর্মসূচিত সংহতি প্রকাশ করে। এ সময় প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
বিএ/