রাজশাহীর পুঠিয়ার উপজেলার শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে বিএনপি নেতারা বলেছেন,বর্তমান সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর ঠিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকার তাকে মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।
তারা বলেন, অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ। আর বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে বলে হুসিয়ারি দেন নেতারা।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার বিকেলে রাজশাহী জেলা বিএনপির উদ্যোগে জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তরা।
সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আ’লীগ সরকার দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের ভোটের অধিকার লুট করে নিয়েছে। সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায় নেই। তাই সরকার জনগণকে নির্যাতন নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি লোক দেখানো সংলাপ করছেন। আসলে রাষ্ট্রপতির হাতে কোনো ক্ষমতা নেই।
মিজানুর রহমান মিনু বলেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর ঠিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকার তাকে মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে বলে হুসিয়ারি দেন তিনি। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে এই অবৈধ সরকার শুভ বুদ্ধির পরিচয় দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী গুরুতর অসুস্থ। স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা নিয়ে সরকার বিভিন্ন রকম ছলচাতুরি করছে। বিদেশে চিকিৎসা করতে না দিয়ে সরকার তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য দ্রুত মুক্তি দাবি করেন তিনি।রিজভী বলেন, আমরা অনুকম্পা চাই না। ন্যায়বিচার চাই। বেগম খালেদাজিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও দেশ নায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এই অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করতে হবে। আর এ জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই। দুর্বার আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহবান জানান রুহুল কবির রিজভী। এসময় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন।
এ্যাড. নাদিম মোস্তফা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে জনগণের আন্দোলনের স্রোতে শেখ হাসিনার সরকারকে ভাসিয়ে দেয়া হবে।
আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, খুব শীঘ্রই সরকারের পতন হবে। সরকারের লোকজনের অবস্থা ডা: মুরাদের মতোই হবে। কেউ এদেরকে জায়গা দেবে না। জনগণ এদের পালানোর পথ বন্ধ করে দেবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত ও ওবায়দুর রহমান চন্দন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু বাক্কার সিদ্দিক ও নিপুণ রায়। সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ ও বিএনপি যুবদলের সাবেক নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জল।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, বিএনপি নেতা সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা, বিএনপি নেত্রী সাবেক এমপি জাহান পান্না, রাজশাহী জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রোকুনুজ্জাম আলম, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা মামুনসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীউপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নেতাকর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হারিস চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
বিএ/
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।