রাজশাহীর বৃহত্তর পুঠিয়ার ভালুকগাছী কান্তার বিলে জোরপূর্বক ফসলী জমিতে পুকুর খনন করাকে কেন্দ্র করে ৬ গ্রামবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে ৫ গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে । এছাড়া ৬ সেপ্টেম্বর ভালুকগাছী নওদাপাড়া গ্রামের মৃত কুকোন থান্দার এর ছেলে আজাদ আলী পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দেন।
কান্তার বিলে ফসলী জমিতে পুকুর খননের স্থানে বর্তমানে ভেকু মেশিন রাখা রয়েছে। পুকুর খননকারী দালালরা পুকুর খনন শুরুর (১৫ সেপ্টেম্বর) দিন থেকে ৫টি গ্রামের মানুষ মাইকিং করে রাতে পাহারা বসিয়ে পুকুর খননের প্রতিবাদ করে আসছে।
পুকুর খননকারী দালালরা কৌশলে বিভিন্ন মহলকে গোপন চুক্তির মাধ্যমে ম্যানেজ করে গভীর রাতে পুকুর খননের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই পুকুর খননকে কেন্দ্র করে সেখানে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পাড়ে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তাই বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তারা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছী ইউনিয়নের কান্তার বিলে কিছু পুকুর খননকারী দালাল চলতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ফসলী জমি জবর দখল করে পুকুর কাটার জন্য এস্কেভেটর মেশিন, ট্রাক্টর ইত্যাদি নিয়ে প্রবেশ করে। ত্রাস সৃষ্টি করে জনমনে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। সে সময় ৫ গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করে।
উপজেলার ভালুকগাছী নওদাপাড়া গ্রামের মৃত কুকোন এর ছেলে আজিবর রহমান ১০ ব্যক্তির নামে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে মামলা দায়ের করেন।মামলায় আসামী করা হয়েছে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছী ইউনিয়নের চকদমাদি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে আশরাফুল ইসলাম, ভালুকগাছী পাঁচআনীপাড়া গ্রামের মৃত গোলাম রসুলের ছেলে ফারুক সরকার, ভালুকগাছী গ্রামের মৃত আব্দুল করিম সরকারের ছেলে আব্দুল জলিল সরকার, চকদোমাদী গ্রামের আবুলের ছেলে সানোয়ার, ভালুকগাছী নওদাপাড়া গ্রামের খবির উদ্দিনের ছেলে আয়ুব আলী, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের তাহের উদ্দিনের ছেলে আবুল কাশেম এবং ভালুকগাছী নওদাপাড়া গ্রামের মৃত বুধরুই এর ছেলে সদু মোল্লা।
এলাকাবাসী বিচার দাবী করে বলেন, আশরাফুল নামের এক নেতা নির্বাচিত এক জনপ্রতিনিধির ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাধারণ মানুষের জমি জবর দখল, জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করে তাদের টাকা না দেওয়া সহ বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) সহ প্রশাসনের নিকট তার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান তারা।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, এই পুকুর তাহেরপুরের মানুষ খনন করছে। তবে আমার নামেও মামলা করেছে তারা। তবে পুকুর খনন বন্ধ রয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জি এম হীরা বাচ্চু জানান, তিনি এভাবে পুকুর খননের বিরুদ্ধে। তার নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ এসব অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি।
পুঠিয়া থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, আমি বর্তমানে থানার দায়িত্বে আছি। জোরপূর্বক পুকুর খনন নিয়ে সেখানে উত্তেজনা ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,কে, এম নূর হোসেন নির্ঝর এর ফোনে কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে এসএমএস এর মাধ্যমে জানান তিনি রাজশাহীতে মিটিংয়ে আছেন। তাই তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিএ/