পিকনিকে গিয়ে গোলমাল বেধেছিল দু’পক্ষে। বাড়ি ফেরার পথে পিকনিক দলের এক নারীকে তুলে নিয়ে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল অন্য পক্ষের কিছু যুবকের বিরুদ্ধে।
নববর্ষের রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থানার আমতলা বাজার এলাকায় মেছোভেড়ির একটি আলাঘরে। অভিযোগ পেয়ে শনিবার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় ছয় জনকে।
মিনাখাঁর এসডিপিও নির্মল দাস বলেন, ‘ধর্ষণ, মারধর এবং ভাঙচুরের অভিযোগে মিনাখাঁর কুমারজোল গ্রামের বাসিন্দা সালাম সর্দার, হাবিবুল্লা মোল্লা, সরিফুল গাজি, সুরজিৎ মণ্ডল ওরফে দীপঙ্কর, মাড়িবেড়িয়ার রাকিবুল ইসলাম মল্লিক এবং কাদিরহাটি গ্রামের বাসিন্দা বাকিবিল্লা তরফদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই নারীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ গ্রেপ্তার ছয় জনকে রোববার বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১২ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের ঘটকপুকুর এলাকা থেকে ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল টাকিতে পিকনিক করতে গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে বছর তিরিশের ওই নারীও ছিলেন। মিনাখাঁর কুমারজোল গ্রাম থেকে এক দল যুবক পিকনিক করতে গিয়েছিল। দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। হাতাহাতি শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় তখনকার মতো গোলমাল মিটে গিয়েছিল। অভিযোগ, ফেরার পথে দুপক্ষের গাড়ি চালকদের মধ্যে আর এক দফা গোলমাল বাধে। কুমারজোল থেকে যাওয়া একটি গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়।
কুমারজোলের যুবকেরা মিনাখাঁ থানার কাছে, কিসান মান্ডির সামনে কলকাতা-বাসন্তী হাইওয়েতে দাঁড়িয়ে ছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ভাঙড়ের পিকনিক দলের গাড়ি আসতে দেখে তারা সেটি দাঁড় করায়। রড, বাঁশ নিয়ে চড়াও হয়ে গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। গাড়ির যাত্রীদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।
ভয় পেয়ে ভাঙড়ের পিকনিক দলের লোকজন পালায়। ওই মহিলা এবং এক যুবক গাড়ি থেকে নামতে পারেননি। অভিযোগ, নেশাগ্রস্ত যুবকরা ওই গাড়িতেই দুজনকে তুলে নিয়ে আমতলা বাজারের দিকে চলে যায়। সেখানে ওই যুবককে মারধর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের কাছে ওই নারী অভিযোগ করেছেন, তাকে মেছোভেড়ির একটি আলাঘরে নিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে সেখানে ধর্ষণ করা হয়। তার কথায়, ‘জনা দুয়েক লোক আমার ওপরে চড়াও হয়েছিল। বাকিরা দাঁড়িয়ে থেকে ওদের প্ররোচিত করছিল। কিছুক্ষণ পরে আমি জ্ঞান হারাই। সামান্য একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এভাবে আমার ওপরে অত্যাচার হবে, ভাবতেও পারছি না।
অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে নারী নিজেই থানায় এসে অভিযোগ করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে নেমে শনিবার রাতেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বিএ/