খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় সাংবাদিকদের ওপর ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে ৫ আগস্ট রবিবার শিক্ষার্থীদের আন্দেলন চলাকালে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় সাংবাদিক এবং ফটো সাংবাদিকদের ওপর টার্গেট করে হামলা করা হয়।
জানা যায়, হেলমেট পরে এই হামলায় দুর্বৃত্তরা রড, জিআই পাইপ এবং চাপাতি ব্যবহার করে। হামলায় মোট ১০-১২ জন সাংবাদিক আহত হন। তাঁদের মধ্যে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বা এপি-র এএম আহাদের অবস্থা গুরুতর।
হামলায় আহত দৈনিক বণিক বার্তার ফটো সাংবাদিক পলাশ শিকদার বলেন, ‘‘আমরা আগেও পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা ধরনের বাধার মুখে পড়েছি। কিন্তু এবার যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তা অতীতে কখনো দেখিনি। আমাদের ওপর কয়েক দফা হামলা চালানো হয়। প্রথম দফা হামলার পর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বের হবার পর আবারো হামলা করে তারা। আর সেটা তারা করে পুলিশের সামনেই। আমাদের কেউ রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। আমরা যদি পালাতে না পারতাম তাহলে হয়ত আমাদের মেরেই ফেলত।”
আরেকজন ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল বলেন, ‘‘আমরাও তো ওই দিন খুন হয়ে যেতে পারতাম। আমার মনে হয়েছে হত্যার উদ্দেশ্যেই সেদিন হামলা হয়েছে।”
এদিকে, ২৯ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর থেকেই এবার সাংবাদিকরা নানাভাবে হামলার শিকার হন। এই হয়রানির অভিযোগ দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই রয়েছে। সোমবারও সাংবাদিকরা বসুন্ধরা ও আফতাব নগর এলাকায় হামলা এবং হয়রানির শিকার হন। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এলাকায় একজন নারী সাংবাদিককে হয়ারানি করে পুলিশ। সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, কোনো পক্ষই সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কাজ করেন না।
সাংবাদিকদের ওপর এই হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ঢাকায় সাংবাদিকরা বিক্ষোভ করেন। কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারা এলাকায় তরুণ সাংবাদিকদের উদ্যোগে সকাল ১০টায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। এই সব সমাবেশে সাংবাদিক, ফটো সাংবাদিক সবাই অংশ নেন। ফটো সাংবাদিকরা ক্যামেরা রেখে প্রতিবাদ জানান। আর সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানান ক্যামেরা, কলম এবং লেখার প্যাড নীচে রেখে। তাঁরা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত ও আটক করার দাবি জানান। নয়ত সারাদেশের সাংবাদিকদের নিয়ে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা বলেন তাঁরা। ডয়চে ভেলে