পাবনা ব্যুরো: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় প্রাইভেটকার ও অস্ত্রসহ ৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটককৃত ছিনতাইকারীরা সকলেই সরকারি দলের কর্মী এবং একজন পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী টেগারের ছেলে। মধ্য রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃত ছিনতাইকারীরা হলেন মোজাহিদ ক্লাব সংলগ্ন পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী টেগারের ছেলে গোলাম কিবরিয়া ইমন (৩৫), মহিষের ডিপু সংলগ্ন হাসি ভবনের আসাদুল ইসলাম রতনের ছেলে ও সাবেক ছাত্রদল নেতা শিপুলের ভাই মাদক ব্যবসায়ী হাসানুল ইসলাম বড় (৩৫), কামাল আহম্মেদ মজনুর ছেলে মারুফ আহম্মেদ সাব্বির (২৫), এবং আশরাফুল ইসলাম বাটুর ছেলে ফয়সাল হোসেন (১৯)। এছাড়া আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে জীবন (৩০) পালিয়ে গেছে। এরা সবাই পাবনা সদর থানার বাসিন্দা।
ছিনতাই মামলার বাদী ফতে মোহাম্মদপুর এলাকার আকুল প্রামানিক জানান, তিনি ও তার পার্টনার হানিফ উপজেলার দাশুড়িয়ায় মাছ বিক্রি করে আসার সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে অরোণকোলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরির কাছে নির্জন স্থানে প্রাইভেটকার নিয়ে ছিনতাইকারীরা প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তাদের অটোবাইক থামায়। ছিনতাইকারীরা এসময় বলে, আমরা কাল এখান থেকে ইয়াবা উদ্ধার করেছি এবং আপনাদের কাছেও ইয়াবা আছে বলে তথ্য পেয়েছি। এ কথা বলে তারা তল্লাশি করতে শুরু করে। তাদের কাছে মাছ বিক্রির ৬৫ হাজার টাকা দেখে ছিনতাকারীরা টাকার মধ্যে ইয়াবা আছে বলে টাকাগুলো নিয়ে নেয়। টাকা নেয়ার পর তারা একটি ড্যাগার বের করে চেঁচামেচি করলে জানে মেরে ফেলব বলে টাকা নিয়ে প্রাইভেটকারে চড়ে পালিয়ে যায়। ছিনতাইকারীরা তাড়াহুড়ো করে চলে যাওয়ার সময় তাদের একটি দামী মোবাইল ফোন পড়ে যায়। এই অবস্থায় তিনি ওই মোবাইল নিয়ে থানায় এসে অভিযোগ করেন।
অকুল আরও জানান, এ সময় মোবাইলে অনেক রিং আসলেও তারা ধরেননি। পুলিশ রিং ধরে এবং কৌশল করে বলেন, ফোন পেয়েছি- মিষ্টি খাওয়ার টাকা দিয়ে শহরের রেলগেট থেকে ফোন নিয়ে যান। ঈশ্বরদী থানার এসআই শাহীন এই অবস্থায় রেলগেটে একদল সাদা পোশাকের পুলিশ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছিনতাইকারীরা কারযোগে ফোন নিতে গেলে পুলিশ ৪ জনকে আটক করলেও জীবন পালিয়ে যায়। এসময় উপস্থিত জনতা ছিনতাইকারীদের গণপিটুনি দেয়।
ওসি আজিম উদ্দিন জানান, রাতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা শতাধিক ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছে। ছিনতাইয়ের সময় তারা প্রাইভেটকার বা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে বলেও তারা জানিয়েছে। গ্রেফতারকৃত এই কুখ্যাত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা, ছিনতাইসহ দ্রুত বিচার আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহুরুল হক।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ