পাবনা প্রতিনিধিঃ ‘২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে পাবনার ৫টি উপজেলার ৩৭টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। একই বছরের জুলাই মাস থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি এই আট মাসে প্রকল্পভুক্ত এলাকার গ্রাম আদালতগুলোতে ১ হাজার ১৮২টি মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার ৭৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, যার শতকরা হার ৮০ ভাগ। সেইসাথে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫৫ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিকে আদায় করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি জমি উদ্ধার হয়েছে ৩৩৪.৪৫ শতাংশ। যার আনুমানিক মুল্য ৪৬ লাখ ১৬ হাজার ৮৩৪ টাকা।’
বৃহস্পতিবার পাবনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত গ্রামীন নারী, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক পরামর্শ সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সালমা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস, ইউএনডিপি’র কমিউনিকেশন ও আউটরিচ স্পেশালিস্ট অর্পনা ঘোষ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আতিয়ুর রহমান।
অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের পাবনা ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর মনসুর আহমেদ, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত নাগ, সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সম্পাদক আঁখিনূর ইসলাম রেমন, টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতি পাবনার আহবায়ক রাজিউর রহমান রুমী, ইনকিলাব প্রতিনিধি মুরশাদ সুবহানী, প্রবীণ কলামিষ্ট এবাদত আলী, দৈনিক সিনসা পত্রিকার সম্পাদক এস এম মাহবুব আলম, এটিএন নিউজ প্রতিনিধি রিজভী জয় প্রমুখ।
সভায় জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, গ্রামে অনেক ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রতিকার পেতে থানা বা আদালতের শরনাপন্ন হন। যাতে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হয়। এক্ষত্রে গ্রাম আদালত সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে জনসচেতনতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন গণমাধ্যমকর্মীরা। সভায় জেলা প্রশাসক ঘোষণা দেন, পাবনায় গ্রাম আদালত পরিচালনায় যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সবচেয়ে বেশি দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সাথে কাজ করতে পারবেন তাকে পুরস্কার ও সংবর্ধনা দেয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রান্তিক এলাকার জনগণ গ্রাম আদালতের মাধ্যমে যাতে কম খরচে, স্বল্প সময় তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারেন সেজন্য গণমাধ্যমকে বিভিন্ন ইতিবাচক সংবাদ প্রচারে ভূমিকা রাখতে হবে। ইতিমধ্যে এখন পর্যন্ত দেশের আদালতে যে মামলাজট রয়েছে তা শেষ করতে কমপক্ষে ৫০ বছর সময় লাগবে। দেশের প্রেক্ষাপটে গ্রাম আদালত অত্যন্ত ভাল একটি বিচার মাধ্যম। এতে মামলাজট কমবে, জনভোগান্তি কমবে।
বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সহায়তায় পাবনা জেলা প্রশাসন এই সভার আয়োজন করে। সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ৪০জন সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ