খবর২ ৪ঘণ্টা, ডেস্ক: ভারতীয় সমাজ, সংস্কৃতি, দৈনন্দিন অভ্যাসের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে পান। অতিথি আপ্যায়ন থেকে খাওয়ার পর মুৎসুদ্দি— পান না হলে যেন গোটা বিষয়টাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়! এ দেশে এখনও ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাসকে ক্ষতিকর ‘নেশা’ হিসাবে বিবেচনা করে ‘অপরাধ’ বলে মনে করা হয়। তবে পান প্রায় সকলের কাছেই মুৎসুদ্দি বা হজমে সহায়ক হিসাবে গ্রহনযোগ্য। আমাদের পাচন শক্তি বৃদ্ধি করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করা… পানের এমন আরও কত গুণ!
কিন্তু আমরা শুধুমাত্র পান পাতা আর ক’জন চিবিয়ে খাই! সুপারি, জর্দা (তামাক), চুন আরও কত কী পানের সঙ্গে দিয়ে খাই আমরা। আর পানের সঙ্গে সুপারি বা জর্দা যুক্ত হলেই তা কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর! এই ভাবে পান খাওয়ার অভ্যাস বাড়ায় ক্যান্সারের ঝুঁকি। অন্তত এমনটাই দাবি ক্যান্সার গবেষক ও চিকিৎসকদের।
আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের আইএআরসি-এর (International Agency for Research on Cancer) গবেষকদের মতে, যাঁরা তামাকজাতীয় দ্রব্যাদি, চুন, সুপারি, খয়ের দিয়ে পান খান, অন্যান্যদের তুলনায় তাঁদের ‘ওরাল ক্যান্সার’ হওয়ার আশঙ্কা প্রায় পাঁচ গুণ বেশি! সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পান, পান মশলা, জর্দা ইত্যাদি খাওয়ার চল অনেক বেশি। ফলে বিশ্বের মোট ‘ওরাল ক্যান্সার’-এ আক্রান্ত রোগীর (প্রতি বছর ৩ লক্ষ ৯০ হাজার আক্রান্ত) ৫৮ শতাংশই (২ লক্ষ ২৮ হাজার রোগী) দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রয়েছে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, চুনে রয়েছে প্যারা অ্যালোন ফেনল যা মুখে ঘা (আলসার) সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘা ধীরে ধীরে ক্যানসারে রূপান্তরিত হতে পারে। এ ছাড়া কাঁচা সুপারিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার সাইকোঅ্যাকটিভ এলকালয়েড যা শরীরে প্রচণ্ড উত্তেজনার সৃষ্টি করে। সুপারি চিবোলে গরম লাগতে থাকে, এমনকি শরীর ঘেমেও যেতে পারে। সুপারি খেলে বেড়ে যেতে পারে হাঁপানির সমস্যা, হাইপারটেনশন বা রক্তচাপ। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পান পাতা তেমন ক্ষতিকর না হলেও পান খাওয়ার আনুষাঙ্গিক উপাদানগুলি মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
খবর ২৪ঘণ্টা/ জেএন