নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘পাকিস্তানের ১৯৭১ এর পাপ, নারী ধর্ষণের পাপ, শিশু হত্যার পাপ, পুড়িয়ে মানুষকে হত্যা করার পাপ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে মানুষকে সর্বশান্ত করার পাপ, দেশের স্বাধীনতা চেয়েছিল বলে নিরীহ মানুষদের হত্যা করা, নির্যাতন করা, পঙ্গু করে দেয়া, লুটপাট করার পাপে পাকিস্তান ধ্বংস হয়ে যাবে, ধ্বংস হতে বসেছে। যতদিন তারা মাফ না চাইবে, আমরা আমরা মাফ না করবো, পাকিস্তানকে মাফ চাইতে হবে, আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজনকে পাকিস্তানকে মাফ করতে হবে, না হলে পাকিস্তান জ্বলে পুড়ে ছাড়খার হয়ে যাবে। কবে পাকিস্তানের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, আমরা দেখতে চাই।’ সোমবার দুপুরে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তেন ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় রাজশাহী’ এর উদ্যোগে ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প পাঠ’ স্লোগানকে সামনে রেখে ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার স্মরণে মাসব্যাপী ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চা’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র লিটন বলেন, ভারত-পাকিস্তান দেশভাগের পর বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানের সাথে থাকলে আমাদের উন্নয়ন হবে না। সেজন্য দেশভাগের পর থেকেই মানুষকে সেইভাবে প্রস্তুত করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এদেশের মানুষ পেটভরে খেতে পারবে, ভালো কাপড় পরবে, আজকে সেসব স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যসহ সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। পাকিস্তানের চেয়ে আমরা এখন সব সূচকে অনেক উপরে। আমরা যে পরিমাণ রপ্তানী করি, পাকিস্তান তার অর্ধেকও করতে পারে না। এমনকি পাকিস্তানে এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানকে কিভাবে সুইডেন বানানো যায় সেটার কথা বলা হচ্ছিল, এ সময় তাদের বক্তারা বলেন, ‘সুইডেনকিবাদ ছোড় দো, হামকো বাংলাদেশ বানাদো। মেয়র আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার পরিকল্পনা করেছে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত বানানোর। কিন্তু উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা চলছে, আমি আশা
করছি ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা বিশে^র অন্যতম ধনী দেশে পরিণত হবো।তিনি আরো বলেন, সামনে আসছে শুভদিন। উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে গেছে বাংলাদেশ। রাজশাহীতেও অনেক উন্নয়ন হবে। ফ্লাইওভার হবে। আগামীতে রাজশাহী বিশে^র অন্যতম শহরে পরিণত হবে। এজন্য সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করার আহ্বান জানান মেয়র লিটন। সভাপতির বক্তব্যে উন্নয়নের অভিযাত্রায় রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা বলেন, আমাদের মধ্যে হয়তো অনেকেই আছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানি না। নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, কতজন শহীদ হয়েছেন। কিন্তু অনেকের কাছে সঠিক তথ্য পৌছায়নি। আমার ইচ্ছে, সামনে দিনে যে তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে, তারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানবে। আজকে আমাদের কথা বলার দিন না, আজকে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে শুনবো এবং আমাদের ভাই-বোন, পরিচিত যারা আছে, নতুন প্রজন্ম যারা আছে, তাদের মাঝে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ছড়িয়ে দিবো। আমি চাই আমাদের নতুন প্রজন্ম মক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানুক, শিখুক, চর্চা করুক।উন্নয়নের অভিযাত্রায় রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান
আলী বরজাহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান খন্দকার। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হবিবুর রহমান ও রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন রওশন আরা কেয়া ও এসএম ইউনুস হাসান অন্তু।এ সময় রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাজিব, উন্নয়নের অভিযাত্রায় রাজশাহীর কার্যনিবাহী সদস্য হাসনাইন বিষ্ময়সহ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় ও কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মেয়র লিটনকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন উন্নয়নের অভিযাত্রায় রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।
খবর ২৪ঘণ্টা/এমকে
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।