খবর২৪ঘণ্টা.কম: রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য মেয়র পদপ্রার্থীরা মনে করছেন, নির্বাচনে এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী অবশ্য বলছেন, নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা। অন্যদের জনভিত্তি নেই বলে নানা অপপ্রচার করছে। এবার রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৫টি দলের পাঁচজন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল (ধানের শীষ), গণসংহতি আন্দোলনের (স্বতন্ত্র) মুরাদ মোর্শেদ (হাতি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মো. হাবিবুর রহমান হাবিব (কাঁঠাল) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (চরমোনাই) মো. শফিকুল ইসলাম (হাতপাখা)।
সিটি নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ কেমন দেখছেন-জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ বলেন, ‘মিডিয়ার মাধ্যমে খুলনা-গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কারচুপির বিষয়টি জানতে পেরেছি। এই তথ্যটি দিয়ে ইসির মতবিনিময়সভায় নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। কারণ পরিস্থিতি বলছে, রাজশাহীতেও এ ধরনের আশঙ্কা আছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার চেয়ে বড় কথা রাজশাহীতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে জটিলতা রয়েছে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্ধারিত মাপের চেয়ে বড় ডিজিটাল ফেস্টুন টাঙিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বুধবার মতবিনিময়সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ৬০/৪৫ সেন্টিমিটারের বাইরে প্রার্থীদের কারও ফেস্টুন থাকলে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের প্রশ্ন ১০ তারিখে এই আইনটি কোথায় ছিল? নৌকার প্রার্থী এরই মধ্যে ১০ দিন এই অবৈধ ফেস্টুনের প্রচারণার সুযোগ পেলেন।’
মেয়র পদপ্রার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যে কোটি কোটি টাকার ব্যানার, বিলবোর্ড, পোস্টার করা হয়েছে এগুলো এক সময় পরিবেশ দূষণে সহায়ক হবে। এত ব্যাপকভাবে প্রচারের সুযোগ দেওয়া নির্বাচন কমিশনের ঠিক হয়নি।’ নির্বাচনে অবাধে কালো টাকা ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরেক মেয়র পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলামও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘প্রচারণার অশুভ প্রতিযোগিতায় নগরবাসীর করুণ অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।’
নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘মহানগরীতে অশান্তির বাতাস বইছে। ইতোমধ্যে ধানের শীষে প্রচারণায় সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা করে সাংবাদিকসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের আহত করেছে। সরকারদলীয় প্রার্থী রাজশাহীকে বদলানোর নামে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন। ধানের শীষের প্রচারণায় প্রতিনিয়ত বাধা দেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে বাধা দেওয়াসহ পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ড্রেনে ফেলে দিচ্ছে। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো অনেক আগেই হারিয়ে গেছে।’ আমাদের সময়
অন্যদিকে, নৌকার মেয়র পদপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘কেউ প্রচারণা না চালালে আমরা তো হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না। শুধু আমরাই নয়; নগরীতে আমাদের পক্ষে যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে পুরো নগরবাসীই নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধানের শীষের মেয়র পদপ্রার্থীর দলের মধ্যেই কোন্দল। তাদের নিজেদেরই ঠিক নেই তো জনগণের জন্য তারা কী করবে? ৫ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করে নগরীকে ১৫ বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজেই জনগণ চায় উন্নয়ন আর শান্তি। বিএনপি-জামায়াত জোটের অপপ্রচার-মিথ্যাচার জনগণ জেনে ফেলেছে। তারা নিজেরাই ককটেল মেরে রাজশাহীর নির্বাচনী পরিবেশকে ঘোলাটে করতে চাচ্ছে।’
খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।